July 2019

আমাদের এই মহাবিশ্বের মতোই আরেকটি মহাবিশ্বের অস্তিত্ব আঁচ করছেন বিজ্ঞানীরা। ২০১৯ সালে সেই গুপ্ত ছায়া মহাবিশ্ব আবিষ্কারের জন্য প্রথম পদক্ষেপ নেবে তারা। পূর্বাঞ্চলীয় টেনেসির ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির গবেষকরা এ সংক্রান্ত পরীক্ষা চালাতে যন্ত্রপাতি নির্মাণের কাজও শেষ করেছেন। পরীক্ষাটি সফল হলে দেখা মিলতে পারে ছায়া কণা, ছায়া গ্রহ এমনকি প্রাণেরও। এ প্রকল্পের নেপথ্যের পদার্থবিদ লিয়াহ ব্রুসার্ড এমনটাই দাবি করছেন।

গুপ্ত ছায়াবিশ্ব আবিষ্কারের বিষয়টি ‘স্ট্রেঞ্জার থিংগস’ সিরিজের সায়েন্স ফিকশনের মতো মনে হতে পারে। পদার্থ বিজ্ঞানীরা তাদের এ সংক্রান্ত গবেষণায় বারবার সামঞ্জস্যহীন ফলাফল পেয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত এর বাস্তব প্রমাণ শনাক্ত করা যায়নি। তবে ৯০ দশকের দুইটি সামঞ্জস্যহীন ফলাফলই ছায়া মহাবিশ্ব সংক্রান্ত গবেষণার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। ওই গবেষণায় পদার্থবিদরা পরমাণুর নিউক্লিয়াসে থাকা নিউট্রন কণা নিউক্লিয়াস থেকে বিচ্ছিন্ন হবার পর তা ভেঙে প্রোটনে পরিণত হতে কত সময় লাগে তা পরিমাপ করছিলেন।

দুইটি ভিন্ন ভিন্ন পরীক্ষায় তারা দেখেছেন, ধারণা অনুযায়ী নিউট্রনগুলো একেবারে একই হারে ক্ষয় হয়ে প্রোটনে পরিণত হচ্ছে না, ভিন্ন দুই হারে ভাঙছে। দুইটি পরীক্ষার একটিতে দেখা গেছে মুক্ত নিউট্রনগুলো চৌম্বক ক্ষেত্রে আটকে পড়ছে এবং পরীক্ষাগারের বোতলের ট্র্যাপস-এ দলবদ্ধ হয়ে আছে। আরেক পরীক্ষায় পারমাণবিক চুল্লি প্রবাহ থেকে প্রোটন কণার উত্তরকালীন উপস্থিতির মধ্য দিয়ে নিউট্রনগুলো শনাক্ত করা হয়েছে। চুল্লি প্রবাহে বিস্ফোরিত এসব কণা গড়ে ১৪ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড করে সচল ছিল। যা বোতল ট্র্যাপস-এ থাকা নিউট্রন কণার সচলাবস্থার চেয়ে ৯ সেকেন্ড বেশি। এক্ষেত্রে তারতম্য খুব সামান্য মনে হলেও তা বিজ্ঞানীদেরকে সমস্যায় ফেলে দিয়েছে। তা সত্ত্বেও ছায়া মহাবিশ্বের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনার পেছনে বিশ্বাসযোগ্য ব্যাখ্যা রয়েছে।

বস্তুত নিউট্রনের আলাদা দুইটি জীবনকাল রয়েছে এবং হতে পারে ১ শতাংশ নিউট্রন ( শনাক্তযোগ্য প্রোটন নির্গত করার আগে) আমাদের বাস্তব ও ছায়া মহাবিশ্বের বিভাজন রেখা পার হয় এবং ফেরত আসে। বিজ্ঞানীরা তাই পরীক্ষার অংশ হিসেবে একটি অভেদ্য দেয়ালে একটি নিউট্রন প্রবাহ বিস্ফোরণ ঘটাতে চাইছেন। দেয়ালের অপর পাশে স্থাপন করা হবে একটি নিউট্রন ডিটেক্টর, সাধারণত যা কোনও কিছুকেই শনাক্ত করবে বলে প্রত্যাশা করা হয় না। তবে ডিটেক্টর যদি নিউট্রনের উপস্থিতি পরিমাপ করতে পারে, তার মানে দাঁড়াবে-নিউট্রনগুলো ‘দোলনের’ মধ্য দিয়ে দেয়াল পাড়ি দিয়ে ছায়া নিউট্রন হিসেবে ছায়া বিশ্বে পৌঁছাতে পেরেছে। এরপর তা দোলনের মধ্য দিয়ে (এই বিশ্বে জগতে) টেনেসির পরীক্ষাগারে ফিরে এসেছে এবং সংবেদনশীল যন্ত্রপাতিতে আঘাত করেছে।

জুনে নিউ সায়েন্টিস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্রুসার্ড বলেন, ‘শুধু যে নিউট্রনগুলোর দোলন আছে এবং মহাবিশ্বে ফিরে আসে, কেবল সেগুলোই শনাক্ত করা যায়।’ এছাড়া বিজ্ঞানীর দলটি দেয়ালের অপর (উভয়) পাশে চৌম্বক ক্ষেত্র স্থাপন করবে। সেখানে তারা ক্ষেত্রের শক্তি-শ্রাবল্য বদলাতে পারে। আশা করা হচ্ছে নির্দিষ্ট শক্তি নিউট্রন কণার দোলনে সহায়তা করতে পারবে।পরিপাটি এ তত্ত্ব সত্ত্বেও গবেষক দল বাস্তব বিশ্বের যমজ ছায়াবিশ্ব খুঁজে পাওয়ার সুযোগ কম বলেই মনে করছেন। প্রাথমিক পরীক্ষার ব্যাপারে ব্রুসার্ড বলেন, এর ফলাফল শূন্য হবে বলেই তার ধারণা। তবে বিজ্ঞানীরা যদি দেয়ালের অপর পাশে একটি নিউট্রন শনাক্ত করতে পারে, তবে এর অনেক গুরুত্ব থাকবে। এনবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্রুসার্ড বলেন, ‘আপনি যদি এমন নতুন কিছু আবিষ্কার করতে পারেন, তবে খেলা পুরোপুরি পাল্টে যায়।’


ছায়া বিশ্বের অস্তিত্ব আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে আমাদের মহাবিশ্বের আইসোটোপ লিথিয়াম ৭-এর ঘাটতিকেও ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। পদার্থবিদদের বিশ্বাস, আইসোটোপ লিথিয়াম ৭ এর যে পরিমাণ উপস্থিতি রয়েছে তা বিগ ব্যাং এ সৃষ্ট পরিমাণের সঙ্গে মেলে না। ‘আমাদের ছায়াপথকে অতিক্রম করে আসা উচ্চ শক্তিসম্পন্ন মহাজাগতিক রশ্মি শনাক্ত করার’ ঘটনাকে ‘ব্যাখ্যা করা যেতে পারে ছায়া বিশ্বের অস্তিত্ব’ দিয়ে । শুধু দৃশ্যমান মহাবিশ্বের মধ্য দিয়ে সফর করার মতো যথেষ্ট শক্তিশালী এগুলো নয়। কিন্তু যদি তাদের দোলন হয় এবং তারা ছায়া-বিশ্বে ঢুকে আবারও ফিরে আসে, তবে এগুলো কিভাবে আসছে তার ব্যাখ্যা করা সম্ভব।

পশ্চিমা দুনিয়ার সঙ্গে হওয়া সমঝোতা থেকে আংশিক সরে এসে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত বাড়িয়েছে ইরান। ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই স্বাক্ষরিত ওই চুক্তিতে বলা হয়েছিল, তেহরান তার স্পর্শকাতর পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করবে। অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নেওয়ার বিনিময়ে আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের দেশে ঢুকতে দেবে। তবে ওই চুক্তি বা সমঝোতার চার বছরের মাথায় ২০১৯ সালের ১ জুলাই চুক্তি থেকে আংশিক সরে আসার ঘোষণা দেয় তেহরান। চুক্তি ভেঙে ইউরেনিয়ামের মজুত বাড়ানোর ঘোষণা দেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ।


এ প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগে জানতে হবে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম আসলে কী? বস্তুত দুনিয়াজুড়ে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম বা ইউরেনিয়ামের মজুত বাড়ানো হয় শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে, যেমন চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে বা বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহারের জন্য। কিন্তু এটি যদি অত্যধিক পরিশোধিত হয়, তাহলে সেই ইউরেনিয়াম দিয়ে পারমাণবিক বোমা বানানো যায়। পারমাণবিক চুক্তি অনুযায়ী, ২০৩১ সাল পর্যন্ত ইরানকে কেবল কম সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যার মাত্রা হবে তিন থেকে চার শতাংশ। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য যে ইউরেনিয়াম লাগে, তার মাত্রা ৯০ শতাংশ বা তার বেশি। চুক্তি অনুযায়ী, তেহরান ৩০০ কেজির বেশি কম সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রাখতে পারবে না। এছাড়া ইরান ১৩০ টনের বেশি ভারী পানি, যার মধ্যে সাধারণ পানির চেয়ে বেশি হাইড্রোজেন থাকে তা সংরক্ষণ করতে পারবে না। সেই সঙ্গে বিশেষায়িত পানির মাধ্যমে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের নকশা নতুন করে করতে হবে। বিশেষায়িত পানির রিঅ্যাক্টরে প্লুটোনিয়াম থাকে, যা পারমাণবিক বোমায় ব্যবহার করা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রকে পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে চুক্তি ভেঙেছে ইরান? ২০১৮ সালের মে মাসে পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয় এবং নতুন করে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ট্রাম্পের ভাষ্যমতে, চুক্তিতে অনেক ত্রুটি রয়ে গেছে। তিনি চেয়েছিলেন ইরানকে নতুন চুক্তিতে বাধ্য করতে। কিন্তু তেহরান তাতে রাজি হয়নি। তবে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের ফলে ইরানের অর্থনীতির ওপর ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেলেও তার ইউরোপীয় মিত্র যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি ইরানের সঙ্গে চুক্তি অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেয়। ইরান যেন চুক্তি থেকে সরে না আসে সেজন্য ইউরোপীয় দেশগুলো তেহরানের প্রতি ক্রমাগত আহ্বান জানিয়ে আসছিল। কিন্তু একের পর এক মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এবং অতি সম্প্রতি উপসাগরীয় এলাকায় মার্কিন সামরিক তৎপরতার ফলে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে ১ জুলাই সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুতের সীমা বাড়ানোর ঘোষণা দেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়াযুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ইরানি মন্ত্রীর ঘোষণা ২০১৫ সালে চুক্তির লঙ্ঘন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, তেহরান যদি এ ধরনের আরও পদক্ষেপ নেয় তাহলে তা পুরো চুক্তিকেই প্রশ্নের মুখে ঠেলে দেবে। যুক্তরাজ্য ও জার্মানির পক্ষ থেকেও ইরানকে ইউরেনিয়াম মজুতের সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তারা দেশটির ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগের কৌশল অব্যাহত রাখবে। এখন আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থা আইএইএ যদি একে চুক্তির লঙ্ঘন বলে ঘোষণা করে, তাহলে জাতিসংঘ এবং বৃহৎ শক্তিগুলো ইরানের ওপর আরও অবরোধ আরোপ করতে পারে। বৃহৎ শক্তিগুলো যদি এ নিয়ে কোনও ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ইরান চুক্তির আরও লঙ্ঘন করতে পারে। ইতোমধ্যে তেহরানের দিক থেকে এমন ইঙ্গিত স্পষ্ট। এখন, ইরানের পক্ষ থেকে চুক্তির শর্ত ভাঙ্গার এই খবরের পর পারমাণবিক চুক্তিটির ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হবে। 

কী করেছে ইরান?পারমাণবিক বোমা তৈরি থেকে তেহরানকে বিরত রাখতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উদ্যোগে ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয়টি শক্তিধর পশ্চিমা দেশের একটি চুক্তি হয়। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ইরান তাদের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত একটি বেঁধে দেওয়া সীমার মধ্যে রাখবে। বিনিময়ে দেশটির ওপর থেকে অধিকাংশ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসার পর খোলাখুলি এই চুক্তির বিরোধিতা শুরু করেন। গত বছর তিনি একতরফাভাবে চুক্তি থেকে বেরিয়ে যান। শুধু চুক্তি থেকেই বেরিয়ে গিয়েই ক্ষান্ত হননি; বরং ইরানের ওপর নতুন করে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ শুরু করেন।

এখন জানা যাচ্ছে, পারমাণবিক চুক্তিতে বেঁধে দেওয়া সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুতের সীমা লঙ্ঘন করেছে ইরান। ২০১৫ সালে চুক্তিতে মজুতের সর্বোচ্চ সীমা ছিল ২০২ দশমিক আট কিলোগ্রাম। আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থা আইএইএ সোমবার তাদের সর্বশেষ পরিদর্শনে দেখেছে, ইরানের কাছে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত ছিল ২০০ কিলোগ্রাম। কিন্তু ইরানের সূত্রে জানা গেছে, ইউরেনিয়ামের মজুত ৩০০ কিলোগ্রাম ছাড়িয়ে গেছে। শুক্রবার ভিয়েনাতে এক বৈঠকের পর ইরানের পক্ষ থেকে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার প্রভাব প্রশমনে ইউরোপীয় দেশগুলোর উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। সোমবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ বলেন, ‘চাপের কাছে ইরান কখনোই নতি স্বীকার করবে না। যুক্তরাষ্ট্র যদি কথা বলতে চায়, তাহলে হুমকি ধামকি বন্ধ করে, সম্মান করে কথা বলতে বলতে হবে।’ 

দৃশ্যত যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ক্ষোভ থেকেই চুক্তি থেকে আংশিক সরে এসে ইউরেনিয়ামের মজুত বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে তেহরান। শুধু পরমাণু চুক্তি থেকে ট্রাম্পের সরে যাওয়াই নয়; বরং হোয়াইট হাউসের অন্যান্য পদক্ষেপও ক্ষুব্ধ করেছে তেহরানকে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্বাস মুসাভি-র ভাষায়, ট্রাম্প প্রশাসন আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতিষ্ঠিত পন্থা ধ্বংস করে দিচ্ছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফের ওপর অবরোধের ফলে মার্কিনিদের সঙ্গে কূটনীতির পথ চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে। সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।

মুন্সীগঞ্জ জেলার মাওয়া, মাদারীপুর জেলার শিবচর ও শরীয়তপুর জেলার জাজিরায় চলছে উৎসব। এটি স্বপ্ন বাস্তবায়নের উৎসব। দিনরাত কাজ চলছে এই তিন জেলাবেষ্টিত পদ্মা নদীর পাড়ে। সেখানে পুরোদমে চলছে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ। সেতু নির্মাণের সব কাজ তদারকি করছে সেনাবাহিনী। সরকারের পরিকল্পনামাফিক আগামী ২০১৮ সালের শেষের দিকে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে পদ্মা সেতুর। এ সেতু নিয়ে দেশের মানুষের আগ্রহ অনেক। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হলো—

যা আছে পদ্মাসেতুতে?
১. পদ্মা সেতুর প্রকল্পের নাম ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প’।
২. পদ্মা সেতুর ধরণ দ্বিতলবিশিষ্ট। এই সেতু কংক্রিট আর স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে।
৩. পদ্মা সেতু প্রকল্পে মোট ব্যয় (মূল সেতুতে) ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
৪. ২০১৭-১৮ অর্থবছর পদ্মাসেতু প্রকল্পে সরকারের বরাদ্দ ৫২৪ কোটি টাকা।
৫. পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসন ব্যয় ৮ হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
৬. পদ্মা সেতু প্রকল্পে চুক্তিবদ্ধ কোম্পানির নাম চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড।
৭. পদ্মা সেতুতে থাকবে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগ পরিবহন সুবিধা।
৮. পদ্মা সেতুতে রেললাইন স্থাপন হবে নিচ তলায়।
৯. পদ্মা সেতুর প্রস্থ হবে ৭২ ফুট, এতে থাকবে চার লেনের সড়ক।
১০. পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার।
১১. পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট ৩ দশমিক ১৮ কিলোমিটর।
১২. পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক দুই প্রান্তে (জাজিরা ও মাওয়া) ১৪ কিলোমিটার।
১৩. পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসন হয়েছে দুই পাড়ে ১২ কিলোমিটার।
১৪. পদ্মা সেতু প্রকল্পে কাজ করছে প্রায় চার হাজার মানুষ।
১৫. পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট পিলার ৮১টি।
১৬. পানির স্তর থেকে পদ্মা সেতুর উচ্চতা হবে ৬০ ফুট।
১৭. পদ্মা সেতুর পাইলিং গভীরতা ৩৮৩ ফুট।
১৮. পদ্মা সেতুর মোট পিলারের সংখ্যা ৪২টি।
১৮. প্রতি পিলারের জন্য পাইলিং হবে ৬টি।
১৯. পদ্মা সেতুর মোট পাইলিংয়ের সংখ্যা ২৬৪টি।
২১. পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে।

পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের জন্য মানুষের মাথা লাগবে বলে যে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে, তার বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
পদ্মাসেতুর প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া একটি গুজবের বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকতে বলা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় যে, পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজে মানুষের মাথা লাগবে বলে একটি মহল সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।



সেতুর নির্মাণকাজের অগ্রগতি তুলে ধরে ঐ বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করা হয় যে ব্রিজ নির্মাণে মানুষের মাথা প্রয়োজন হওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি গুজব।


পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য ঐ অঞ্চলের কাছে বেশ কয়েকটি এলাকায় বিভিন্ন বয়সী মানুষ অপহৃত হচ্ছে বলেও গুজব ছড়িয়ে পড়ায় কিছু এলাকায় মানুষের মধ্যে ভিত্তিহীন আতঙ্ক তৈরি হয়েছে বলে দেশের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে খবরও বের হয়।

তবে কোনো এলাকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকেই কোনো অপহরণের খবর পাওয়া যায়নি। তাহলে কেন এমন একটি ভিত্তিহীন গুজব ছড়িয়ে পড়লো যার কারণে পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এই অপপ্রচারের প্রতিবাদ করতে হলো?

পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি বাংলাদেশে সেতু নির্মাণ বা এরকম বড় কোন স্থাপনা নির্মাণ কাজে নরবলির গুজব নতুন নয়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক সুস্মিতা চক্রবর্তী মনে করেন বাংলাদেশের দেশের শাসনব্যবস্থার ঐতিহাসিক পটভূমি এবং গ্রামাঞ্চলের মানুষের চিন্তাধারা পর্যবেক্ষণ করলেই এর কারণ বোঝা সম্ভব।

"ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে দেখবেন আমাদের এই অঞ্চল বিভিন্ন ধর্মের বিভিন্ন রাজা, সম্রাটদের মত বিভিন্ন ধাঁচের শাসকদের অধীনে ছিল।"

মিজ. চক্রবর্তী বলেন নানা কিংবদন্তীমূলক কাহিনী, আবহমান কাল ধরে চলে আসা জনশ্রুতি এবং স্থানীয় সংস্কৃতিতে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন গল্পের ওপর বিশ্বাস করার প্রবণতা মানুষের মধ্যে প্রবল।

"কথিত আছে, ১৫৮০ সালের দিকে মৌলভীবাজারে কমলার দীঘি তৈরি করার সময় দীঘিতে যখন পানি উঠছিল না, তখন রাজা স্বপ্ন দেখেন যে তার স্ত্রী দীঘিতে আত্মবিসর্জন দিলে পানি উঠবে এবং পরবর্তীতে রাজার স্ত্রী আত্মাহুতি দেয়ার ফলেই ঐ দীঘিতে পানি ওঠে।"

দিনাজপুরের রামসাগর তৈরিতেও একই ধরণের কিংবদন্তী প্রচলিত রয়েছে বলে জানান মিজ. চক্রবর্তী। মিজ. চক্রবর্তী বলেন, "এসব ঘটনার কোনো প্রামাণিক দলিল বা সুনিশ্চিত ঐতিহাসিক প্রমাণ না থাকলেও শত শত বছর ধরে মানুষের মুখে মুখে চলে আসার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে এধরণের গল্পের একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়।"

আবার ইতিহাস বিবেচনা করলে দেখা যায়, পৃথিবীর প্রায় সব এলাকার শাসকরাই তাদের প্রজাদের ওপর নিষ্ঠুর অত্যাচার করেছেন। শাসকদের সেসব অত্যাচারের কাহিনীও কালের বিবর্তনে মানুষের মুখে মুখে বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত হয়ে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন হলেও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বিদ্যমান থাকায় সরলমনা মানুষ সেগুলো বিশ্বাস করে।

                              পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি

সফলভাবে ব্রিজ তৈরি করতে পিলারের নিচে মানুষের মাথা দিতে হবে - আবহমান কাল থেকে মানুষের মধ্যে প্রচলিত এই কুসংস্কার নিয়ে বাংলা সাহিত্যে বেশকিছু গল্পও রয়েছে।

মিজ. চক্রবর্তী বলেন, "প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে যেসব গল্প শুনে আসে, কোনো ধরণের যাচাই ছাড়া সেগুলো বিশ্বাস করার প্রবণতার কারণেই এই প্রযুক্তির যুগেও সেসব গল্প সত্যি বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।"

পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজে মানুষের মাথা লাগবে বলে সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে 


'সমাধান: জনগণের কাছে তথ্যপ্রবাহকে অবারিত করা'সুস্মিতা চক্রবর্তীর মতে, "এ ধরণের গুজব যেন না ছড়িয়ে পড়ে তা নিশ্চিত করার একমাত্র পদ্ধতি, ব্রিজ নির্মাণের খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে প্রকল্প পরিচালকের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে বিস্তারিত জানানো।"

"জনগণের কাছে তথ্যপ্রবাহকে যতটা অবারিত করা হবে, সাধারণ মানুষকে ধোঁয়াশা থেকে মুক্ত করার জন্য যতবেশি প্রয়াস নেয়া হবে, ততই এধরণের গুজব তৈরি হওয়া এবং ছড়িয়ে পড়া কমবে।"

এছাড়া বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে সব বিষয়েই রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হওয়ার প্রবণতা থাকার কারণেও এধরণের গুজব তৈরি হয় বলে মনে করেন মিজ. চক্রবর্তী।

"পদ্মা সেতুর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিতর্ক সবসময়ই ছিল। কাজেই এর নির্মাণকাজ নানভাবে পন্ড করার চেষ্টা করে কোনো একটি মহল রাজনৈতিক ফায়দা আদায়ের চেষ্টা করতেই পারে; বিশেষ করে যখন আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে সব বিষয়কে কেন্দ্র করেই বাজে রাজনৈতিক লড়াই তৈরি করার প্রবণতা রয়েছে।"

সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে এখন তোলপাড় সারা দুনিয়ায়। যে কেউ কোন বিষয়ে যা খুশি বলে দিতে পারে সোশ্যাল মিডিয়ায়, আইনের বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না করে।

                        সোশ্যাল মিডিয়ার রাশ টেনে ধরার চেষ্টা চলছে অনেক দেশেই


কিছুদিন আগে নিউজিল্যান্ডে দুটি মসজিদে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালিয়ে ৫০ জনকে হত্যার ঘটনা যেভাবে ফেসবুকে লাইভ স্ট্রিমিং করা হলো, সেটা নিয়ে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ধিক্কার উঠেছে বিশ্বজুড়ে।


বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই এখন চেষ্টা চলছে কিভাবে বড় বড় সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, তাদের দায়িত্বজ্ঞানহীন বেপরোয়া কাজকর্মের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা যায়।

এটিকে আবার অনেকে দেখছেন মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপের চেষ্টা হিসেবে।

সোশ্যাল মিডিয়া মানুষকে এখন মত প্রকাশের সুযোগ করে দিয়েছে। অনেক দেশেই কর্তৃত্ববাদী সরকার সেটা পছন্দ করছে না। কাজেই এধরণের আইন করার পেছনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংকুচিত করার অভিসন্ধি দেখছেন অনেক সমালোচক।

স্ব-নিয়ন্ত্রণফেসবুক বা ইউটিউবের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্মগুলো এতদিন ধরে দাবি করে এসেছে যে, তাদের প্রতিষ্ঠানে এক ধরণের ব্যবস্থা চালু আছে, যেখানে তারা নিজেরাই আপত্তিকর বিষয়বস্তু সরিয়ে নেন।

ইউটিউব দাবি করে, তাদের সাইটে যখন কোন আপত্তিকর কনটেন্ট দেয়া হয়, তারা সেটি জানার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।

সমালোচকরা এসব আইনকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সংকোচন হিসেবে দেখছেন

২০১৮ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই ইউটিউব প্রায় ৭৮ লাখ ভিডিও তাদের সাইট থেকে অপসারণ করেছে। এর মধ্যে ৮১ শতাংশই সরানো হয়েছে যন্ত্রের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। এই ভিডিওগুলোর তিন চতুর্থাংশই কেউ দেখার আগেই সরিয়ে ফেলা হয়।

শুধুমাত্র আপত্তিকর ভিডিও সরিয়ে নেয়ার জন্য সারা বিশ্বে ইউটিউব দশ হাজার লোক নিয়োগ করেছে। তাদের কাজ মনিটরিং করা এবং আপত্তিকর ভিডিও সরিয়ে নেয়া।

ফেসবুক, যারা ইনস্টাগ্রামেরও মালিক, বিবিসিকে জানিয়েছে, তাদের প্রতিষ্ঠানে এরকম কাজের জন্য আছে ৩০ হাজার লোক।

কেবল গত বছরের অক্টোবর হতে ডিসেম্বরের মধ্যেই ফেসবুক ১ কোটি ৫৪ লাখ সহিংস কনটেন্ট সরিয়ে নিয়েছে তাদের সাইট থেকে। আগের তিন মাসের তুলনায় এটা প্রায় ৭৯ লাখ বেশি।

কিছু কনটেন্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবেই শনাক্ত করা যায়, কেউ দেখে ফেলার আগেই। সন্ত্রাসবাদী প্রপাগান্ডার ক্ষেত্রে, ফেসবুক দাবি করছে, ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশ কনটেন্টই স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি দিয়ে শনাক্ত করা হয়েছে, তারপর সেগুলো মুছে দেয়া হয়েছে।

তরুণরা এখন দিনের উল্লেখযোগ্য একটা সময় কাটায় সোশ্যাল মিডিয়ায়
প্রতিশোধ নেয়ার জন্য কেউ যখন কারও নগ্ন ছবি বা ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয় বা কোন জঙ্গি মতাদর্শের কিছু শেয়ার করে, তখন এর জন্য সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে এতদিন দায়ী করা যেতো না। এজন্যে আইনি ব্যবস্থা নেয়া যেতো কেবল সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে।

কিন্তু এখন অনেক দেশেই আইন বদলানোর চিন্তা-ভাবনা চলছে, অনেকে আইন করেও ফেলেছে।

ব্রিটেনসোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের জন্য সম্প্রতি ব্রিটিশ সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব করেছে। এর উদ্দেশ্য, ক্ষতিকর কোন 'কনটেন্ট' কোন সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ পেলে তার জন্য কোম্পানির কর্মকর্তাদেরও যেন দায়ী করা যায়।

ব্রিটিশ সরকারের প্রস্তাবিত ব্যবস্থায় নিয়ম ভঙ্গকারী সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে বিপুল অংকের জরিমানা থেকে শুরু করে তাদের সেবা পুরোপুরি বন্ধ বা ব্লক করে দেয়ার কথাও রয়েছে।


ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার থেকে শুরু করে নানা ধরণের সোশ্যাল মিডিয়া যারা ব্যবহার করেন, তাদের সুরক্ষা দেয়ার জন্য ব্রিটিশ সরকার একটি স্বাধীন নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠনের কথা ভাবছে। এর সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে এজন্যে আলোচনা-পরামর্শ গ্রহণ চলবে আগামী ১লা জুলাই পর্যন্ত।

ব্রিটেনের বর্তমান আইনে সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া যায় না।
ব্রিটিশ সংস্কৃতি মন্ত্রী মারগট জেমস বলছেন, এই অবস্থান পরিবর্তন দরকার। তিনি চান, ব্রিটেনে এমন আইন তৈরি করা হোক, যাতে করে সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো বাধ্য হয় এরকম অবৈধ কনটেন্ট সরিয়ে নিতে।

জার্মানিজার্মানিতে ২০১৮ সালের শুরু থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যাপারে এক নতুন আইন কার্যকর হয়। জার্মানিতে যেসব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের বিশ লাখের বেশি ব্যবহারকারি আছে, তারা সবাই এই আইনের আওতায় পড়বে।

জার্মানির এই নতুন আইনে বলা আছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় কোন কনটেন্ট সম্পর্কে কোন অভিযোগ আসার ২৪ ঘন্টার মধ্যে তা তদন্ত এবং পর্যালোচনা করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলো এর ফলে বাধ্য হয়েছে সেই ব্যবস্থা করতে।

কেউ যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন কোন কনটেন্ট শেয়ার করে যা এই আইনের বিরোধী, সেজন্যে তাকে ৫০ লাখ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিকে জরিমানা করা যাবে পাঁচ কোটি ইউরো পর্যন্ত।

জার্মানিতে আইনটি কার্যকর হওয়ার পর প্রথম বছরে ব্যবহারকারীদের দিকে থেকে ৭১৪ টি অভিযোগ আসে। অনলাইন প্ল্যাটফর্মের কাছে অভিযোগ করার পরও নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আপত্তিকর পোস্ট সরিয়ে নেয়া হয়নি বা ব্লক করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছিলেন এরা।

জার্মানির ফেডারেল বিচার মন্ত্রণালয় বিবিসিকে জানিয়েছে, আইনটি কার্যকর হওয়ার পর বছরের অন্তত ২৫ হাজার অভিযোগ আসবে বলে তারা ধারণা করেছিলেন। কিন্তু অভিযোগ এসেছিল একেবারেই কম। আর যেসব অভিযোগ এসেছে, তার কোনটির ক্ষেত্রেই কাউকে জরিমানা দিতে হয়নি।

ইউরোপীয় ইউনিয়নইউরোপীয় ইউনিয়ন সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিকর কনটেন্টের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বিবেচনা করছে। বিশেষ করে জঙ্গিবাদে উৎসাহ যোগায় যেসব ভিডিও, তার বিরুদ্ধে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নে জেনারেল ডাটা প্রোটেকশন রেগুলেশন (জিডিপিআর) নামে এক নতুন আইন কার্যকর হয়েছে গত বছর থেকে। বিভিন্ন কোম্পানি এবং প্রতিষ্ঠান কিভাবে মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ করবে, সে বিষয়েই মূলত এই আইন।

তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আরেকটি আইনের প্রস্তাব করেছে, যেটি নিয়ে ইন্টারনেট কোম্পানিগুলো দুশ্চিন্তায় আছে। কেউ যদি কোন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে কপিরাইট লঙ্ঘন করে কিছু পোস্ট করে, সেজন্যে ঐ ব্যক্তি তো বটেই, সেই সঙ্গে অনলাইন প্ল্যাটফর্মকেও দায়ী করা যাবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নে পূর্বের আইনে আপত্তিকর কনটেন্টের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করার পর তা সরিয়ে নিলেই মামলা চুকে যেত। কিন্তু নতুন আইনে এজন্যে দায়িত্বটা এখন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ঘাড়েই বর্তাবে। কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন হচ্ছে কীনা, সেটা দেখার এবং নিশ্চিত করার দায়িত্ব থাকবে তাদেরই।

অস্ট্রেলিয়াগত ৫ই এপ্রিল অস্ট্রেলিয়ায় এক কঠোর আইন চালু করা হয়েছে যাতে সহিংস এবং জঘন্য কোন কিছু অনলাইনে শেয়ার করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইন লঙ্ঘন করলে সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ এনে জেল-জরিমানার বিধানও রাখা হয়েছে।

জরিমানার অংকটি বেশ বড়। কোন সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানির গ্লোবাল টার্নওভারের দশ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে।

নিউজিল্যান্ডে দুটি মসজিদে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালিয়ে ৫০ জনকে হত্যার ঘটনা হামলাকারি যেভাবে ফেসবুকে লাইভ স্ট্রিমিং করেছিল, তারপর অস্ট্রেলিয়া এই আইন চালু করলো।

এর আগে ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনলাইন সেফটি আইন নামে আরেকটি আইনে একজন 'ই-সেফটি কমিশনারের' পদ তৈরি করা হয়। ই-সেফটি কমিশনার সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে বাধ্য করতে পারেন আপত্তিকর কনটেন্ট সরিয়ে নিতে। এজন্যে তিনি সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিকে ৪৮ ঘন্টার নোটিশ দিতে পারেন। জরিমানা করতে পারেন পাঁচ লাখ ২৫ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার পর্যন্ত। অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রে এই জরিমানা হতে পারে এক লাখ পাঁচ হাজার ডলার পর্যন্ত।

অস্ট্রেলিয়ায় এই কঠোর আইন করা হয় শার্লট ডসন নামে এক টেলিভিশন উপস্থাপক অনলাইনে হয়রানির শিকার হয়ে আত্মহত্যা করার পর।

রাশিয়া
রাশিয়ায় ২০১৫ সালের ডাটা আইন অনুযায়ী সব সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিকেই রুশ নাগরিকদের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য রাশিয়াতেই কোন সার্ভারে সংরক্ষণ করতে হয়। তবে ফেসবুক এবং টুইটার কিভাবে এই আইন মেনে চলবে সে সম্পর্কে কোন স্পষ্ট ধারণা দিতে না পারায় রুশ কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।

রাশিয়া এর পাশাপাশি জার্মানির মত একটা আইন করার কথা বিবেচনা করছে যেখানে আপত্তিকর কনটেন্ট সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা এটা করবে না তাদের বিরুদ্ধে জরিমানার ব্যবস্থা থাকবে।

চীন
টুইটার, গুগল বা হোয়াটসঅ্যাপ চীনে নিষিদ্ধ। তবে সেখানে একই ধরণের কিছু চীনা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম আছে। যেমন ওয়েইবো, বাইডু এবং উইচ্যাট।

চীনে কিছু ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক আছে। কিন্তু চীনা কর্তৃপক্ষ সেগুলোর ব্যবহারও সীমিত করে দিতে সক্ষম হয়েছে।

চীনে আগে থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর আছে সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণ
চীনের সাইবার স্পেস অ্যাডিমিনিস্ট্রেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এবছরের জানুয়ারি থেকে আগের ছয় মাসে তারা ৭৩৩টি ওয়েবসাইট এবং নয় হাজারের বেশি মোবাইল অ্যাপ বন্ধ করে দিয়েছে। তবে এগুলোর বেশিরভাগই আসলে জুয়া খেলার বেআইনি সাইট বা অ্যাপ।

চীনের হাজার হাজার সাইবার পুলিশ আছে। এরা ২৪ ঘন্টাই নজরদারি চালায় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ওপর। বিশেষ করে রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর কোন তৎপরতা সেখানে চলছে কীনা, তার ওপর।
কিছু কিছু শব্দ স্বয়ংক্রিয়ভাবেই সেন্সর করা হয়। যেমন ১৯৮৯ সালে তিয়ান আনমেন স্কোয়ারের ঘটনা।

নিষিদ্ধ শব্দের তালিকায় চীনা কর্তৃপক্ষ আরও নতুন নতুন শব্দ যোগ করছে। এরকম শব্দ থাকে যেসব পোস্টে, সেগুলো হয় নিষিদ্ধ করা হয় অথবা ফিল্টার করে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বাদ দেয়া হয়।

সৌদি আরবের বাইরে কম মানুষ মোহাম্মদ বিন সালমানের নাম জানেন।
২০১৫ সালে তাঁর বাবা যখন সৌদি আরবের বাদশাহ হন, তখন থেকে মোহাম্মদ বিন সালমানের নাম আলোচনায় আসতে থাকে।

                           যুবরাজ সালমান সৌদি আরবকে বদলে দিতে চান।


৩১ বছর বয়সী এ ব্যক্তি সৌদি আরবের ভেতরে উঠেন প্রবল ক্ষমতাধর হয়ে উঠেন।
মোহাম্মদ বিন সালমানকে ক্রাউন প্রিন্স পদে আসীন করেন তাঁর বাবা এবং সৌদি আরবের বর্তমান বাদশাহ সালমান।
এ পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল মোহাম্মদ বিন সালমানের চাচাতো ভাই মোহাম্মদ বিন নায়েফকে।
ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে যিনি আসীন হন, পরবর্তীতে তিনিই হবেন সৌদি আরবের বাদশাহ।
বর্তমান ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের জন্ম ১৯৮৫ সালের ৩১শে আগস্ট।
তৎকালীন সৌদি প্রিন্স (বর্তমানে বাদশাহ) সালমান বিন আব্দুল আজিজ-এর তৃতীয় স্ত্রীর বড় সন্তান হচ্ছেন মোহাম্মদ বিন সালমান।
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অবস্থিত কিং সৌদ ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি আইন শাস্ত্রে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজে করেছেন।

২০০৯ সালে মোহাম্মদ বিন সালমানকে তাঁর বাবার বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করা হয়।
তাঁর বাবা সালমান বিন আব্দুল আজিজ তখন রিয়াদের গভর্নর ছিলেন। ২০১৩ সাল থেকে মোহাম্মদ বিন সালমান ক্ষমতার কেন্দ্রে আসতে শুরু করেন। তখন তাকে মন্ত্রীর মর্যাদায় ক্রাউন প্রিন্স কোর্টের প্রধান হিসেবে নিয়োগ করা হয়।

২০১৫ সালে বাদশাহ সালমান তাঁর উত্তরাধীকারের সারিতে পরিবর্তন আনেন ঠিক এর আগের বছর তাঁর বাবা সালমান বিন আব্দুল আজিজকে ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে আসীন হয়েছিলেন। মোহাম্মদ বিন নায়েফের বাবা নায়েফ বিন আব্দুল আজিজের মৃত্যুর পর সালমান বিন আব্দুল আজিজ ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে আসীন হয়েছিলেন।

২০১৫ সালে বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ মারা যাবার পর সালমান বিন আব্দুল আজিজ সৌদি আরবের বাদশাহ হন। তিনি ক্ষমতাসীন হাবার পর তাৎক্ষনিক-ভাবে দুটো সিদ্ধান্ত নেন।
এর মধ্যে একটি হচ্ছে, তাঁর ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করা।
তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাবার পরেই ২০১৫ সালের মার্চ মাস থেকে সৌদি আরবের নেতৃত্বে ইয়েমেনে শুরু হয় সামরিক অভিযান। হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে গত দুই বছর ধরে ইয়েমেনে সামরিক অভিযান চললেও তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি। সৌদি আরব এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।

২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে বাদশাহ সালমান তাঁর ক্ষমতার উত্তরাধিকার হিসেবে বেশ নাটকীয় পরিবর্তন আনেন। মোহাম্মদ বিন নায়েফকে ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে নিয়োগ করা হয়। মোহাম্মদ বিন সালমানকে ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে নিয়োগ করা হয়। একই সাথে তিনি সৌদি আরবের অর্থনীতি এবং উন্নয়ন বিষয়ক কাউন্সিলের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান।

এরপর মোহাম্মদ বিন সালমান ২০৩০ সালকে লক্ষ্য করে সৌদি আরবের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক পরিবর্তনের জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ ঘোষণা করেন। দেশের বাইরে তিনি তাঁর বাবা সালমান বিন আব্দুল আজিজের প্রতিনিধিত্ব করে বেইজিং, ওয়াশিংটন সফর করেছেন।
ওয়াশিংটন সফরে গত মার্চ মাসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে বৈঠক করেন

বর্তমানে বাজারে প্রচুর লটকন পাওয়া যায়। ফলটি পুষ্টি গুনে ভরা সেই সঙ্গে এটির দামও তুলনামূলক কম। এছাড়াও এই ছোচ ফলটি আরো অনেক গুণের গুনান্বিত। লটকনের আরো অনেক নাম রয়েছে। তবে বেশিরভাগ মানুষই ফলটিকে লটকন হিসেবেই জানে।

১. লটকনে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ আছে। সিজনের সময় প্রতিদিন দুই-তিনটি লটকন খাওয়া মানেই আমাদের দৈনন্দিন ভিটামিন ‘সি’র চাহিদা পূরণ হওয়া। এ ছাড়া এ ফলে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে চর্বি, আমিষ, লৌহ ও খনিজ পদার্থ।

২. লটকন গাছের শুকনো গুঁড়ো পাতা ডায়রিয়া বেশ দ্রুত উপশম হয়। এর গাছের পাতা ও মূল খেলে পেটের পীড়া ও পুরান জ্বর নিরাময় হয়। এমনকি গনোরিয়া রোগের ওষুধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয় এ ফলের বীজ।

৩. প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনের কোয়ায় খাদ্যশক্তি থাকে প্রায় ৯২ কিলোক্যালরি। অবাক বিষয় হলো এতে ক্যালরি আছে আমাদের জাতীয় ফল কাঁঠালের প্রায় দ্বিগুণ।

৪. লটকনে আছে প্রচুর পরিমাণে নানা ধরনের ভিটামিন ‘বি’। এতে ভিটামিন বি-১ এবং ভিটামিন বি-২ আছে যথাক্রমে ১০ দশমিক ০৪ মিলিগ্রাম এবং ০.২০ মিলিগ্রাম। ফলে পাকা লটকন খাদ্যমানের দিক দিয়ে খুবই সমৃদ্ধ।

৫. লটকনে রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড ও এনজাইম যা দেহ গঠন ও কোষকলার সুস্থতায় কাজে লাগে। এইসব উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

৬. লটকন খেলে বমি বমি ভাব দূর হয় সহজেই। তৃষ্ণাও নিবারণ করে। মানসিক চাপ কমায় এ ফল। এর গাছের ছাল ও পাতা খেলে চর্মরোগ দূর হয়।

কাঁচা মরিচ একটি অতি পরিচিত সবজি। প্রতিদিনই আমরা হাতের কাছেই পাই কাঁচা মরিচ আসুন জেনে নেই কাঁচা মরিচের সব ঔষধি গুণ।

১. হজমে মহৌষধের মতো কাজ করে কাঁচা মরিচ। খুব তেল-মশলার রান্নায় ঝালের পরিমাণ কমিয়ে দিন। হজমের সমস্যা থাকবে না।
২.কাঁচা মরিচে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। এই ভিটামিন হাড়, দাঁত ও মিউকাস মেমব্রেনকে ভাল রাখতে সাহায্য করে।
৩.কাঁচা মরিচে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের জন্য খুবই উপকারি। এছাড়া মুখের বলিরেখা পড়তে দেয় না।
৪. কাঁচা মরিচে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ। ফলে জ্বর, সর্দি-কাশি ইত্যাদি থেকে বাঁচায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।
৫. প্রস্টেট ক্যানসারে ঝুঁকি কমায় কাঁচা মরিচ। স্নায়ুরোগ নিরাময় ও দীর্ঘমেয়াদি স্নায়বিক অসুখের পথ্য হিসাবে কাজ করে।
৬. কাঁচা মরিচ খেলে মস্তিষ্কে সুখী হরমোন এনডরফিন নিঃসৃত হয়।
৭. ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়তে সক্ষম কাঁচা মরিচ। এর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট উপাদান বিভিন্ন ক্রনিক অসুখ ও সংক্রমণ থেকেও শরীরকে দূরে রাখে।

কেশর চা: এই চা-কে কাহওয়া বলে। কাশ্মীরে এই চা খুবই প্রচলিত। কেশর, লবঙ্গ, দারচিনি জলে ভিজিয়ে এলাচ মিশিয়ে এই চা তৈরি হয়। এই চা শরীরকে গরম রাখে ইমিউনিটি বাড়ায়।

গরম দুধে মেশান: সবথেকে সহজ উপায়ে কেশর খেতে হলে একে এক গ্লাস গরম দুধে মেশান। এতে সারাদিনের ধকল কেটে গিয়ে রাতে শান্তির ঘুম হবে।

খুব ঠান্ডা লেগে মাথাব্যথা করছে, তা হলে দুধে কেশর মিশিয়ে উষ্ণ অবস্থায় কপালে মালিশ করুন। এটি ঘরোয়া টোটকা। ত্বকের স্বাস্থ্য ফেরাতেও কেশর ব্যবহার করতে পারেন।

তবে দেখেশুনে কেশর কিনবেন। কারণ অনেক সময় বাজারে জাল কেশর বিক্রি হয়। আসল কেশরকে জলে ভেজালেও সে রং ছাড়ার পরে নিজের রং বজায় রাখে, নকল কেশরের দানা সাদা রং হয়ে যায়।
উল্লেখ্য এই লেখায় শুধুমাত্র জেনেরিক তথ্য রয়েছে। এটি কোনও চিকিৎসকের সুচিন্তিত মতামত নয়।

ঘুম বা নিদ্রা হচ্ছে মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর দৈনন্দিন কর্মকান্ডের ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যখন সচেতন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া স্তিমিত থাকে। জাগ্রত অবস্থার সাথে ঘুমন্ত অবস্থার পার্থক্য হল এ সময় উত্তেজনায় সাড়া দেবার ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং শীতনিদ্রা বা কোমার চেয়ে সহজেই জাগ্রত অবস্থায় ফেরত আসা যায়। সকল স্তন্যপায়ী ও পাখি এবং বহু সরীসৃপ, উভচর এবং মাছের মধ্যে ঘুমানোর প্রক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়।


মানুষ ও অন্যান্য স্তন্যপায়ী এবং অন্য বেশ কিছু প্রাণীর (যেমন কিছু প্রজাতির মাছ, পাখি, পিঁপড়া এবং ফ্রুটফ্লাই) অস্তিত্ব রক্ষার জন্যে নিয়মত ঘুম আবশ্যক। বর্তমানে অস্বাভাবিক জীবন যাপনের কারণে ঘুম নামক শব্দটি প্রায় মানুষের জীবন থেকে চলে যেতে বসেছে। ঠিক এ কারণেই বেড়েছে অবসন্নতা এবং মানসিক অবসাদ। তবে কিছু খাবার নিয়মিত খেলে ভালো হয় বলে জানিয়েছেন পুষ্টি বিজ্ঞানীরা।

নিচে দেওয়া হলো এরকমই ৭টি ঘুমের উদ্রেককরি খাবারের নাম।

গরম দুধ
আয়ুর্বেদ বলে একগ্লাস গরম দুধ ভালো ঘুমের জন্য উপকারী। বিজ্ঞানও এই মতকে সমর্থন করে। দুধে থাকে ট্রিপ্টোফ্যান নামক এমিনো এসিড যা রূপান্তরিত হয় সেরোটোনিনে। সেরোটোনিন মস্তিষ্কে আরামদায়ক অনুভূতির সৃষ্টি করে যা ঘুমের জন্য ভালো। আয়ুর্বেদিক বই এর মতে দুধের সাথে সামান্য এক চিমটি জায়ফল গুঁড়ো, এক চিমটি এলাচের গুঁড়ো এবং গুঁড়ো করা কাজু বাদাম মিশিয়ে নিলে শুধু দুধেরই স্বাদ বাড়ে না, এগুলি ভালো ঘুমেও সাহায্য করে। এমনকি রসুনযুক্ত দুধও ঘুমের জন্য খাওয়া যেতে পারে। এক কাপ দুধের সাথে ৪ ভাগের ১ কাপ পানি এবং ১ কোয়া রসুন মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। এটি গরম গরম খেয়ে ফেলুন।

চেরি
চেরিতে থাকে মেলাটোনিন। এটি মস্তিষ্কের পিনিয়াল গ্রন্থি থেকে তৈরি হয় এবং আমাদের ঘুম এবং জাগরণের অবর্তনটি নিয়ন্ত্রণ করে। ‘দ্য কমপ্লিট বুক অফ হোম রেমেডিস’ বইটি অনুসারে, করি মানসিক ক্লান্তি এবং স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। দিনে ১০ থেকে ১২টা চেরি খেলে ভালো ঘুম হবে আপনার।

কাঠ বাদাম বা আমন্ড
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে সাথে আমন্ড গাঢ় ঘুমেও সাহায্য করে। দুধের মতোই এতে থাকে ট্রিপ্টোফ্যান যা মস্তিষ্কে এবং স্নায়ুতে আরামদায়ক অনুভূতি এনে দেয়। অন্যদিকে ম্যাগনেসিয়াম আমাদের হার্টের ছন্দকে ঠিক রাখে।

ড্রাক চকোলেট
হ্যাঁ আপনি ঠিকই পড়েছেন। ডার্ক চকলেট কিন্তু সেরা নিদ্রা উদ্রেককারী খাবারগুলোর মধ্যে একটি। এতিতে সেরোটোনিন থাকায় এটি মস্তিষ্ককে এবং মনকে শান্ত করে। তার মানে এই নয় যে আপনি যত খুশি ডার্ক চকলেটই খাবেন। সবসময় মনে রাখা উচি ত পরিমিত আহার সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ।

কলা
কলাও কিন্তু ভালো ঘুমের জন্য ব্যাপক ভাবে কাজ করে। কলাতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম পেশী এবং স্নায়ুকে রিল্যাক্স করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে থাকা কার্বোহাইড্রেট আপনাকে প্রাকৃতিক উপায়ে ঘুম পাড়িয়ে দেবে।

ওটস
ওটস খেলে কেবল পেটই ভরে না, এটি ওজন হ্রাস করতে সাহায্য করে এবং এটি সেরা নিদ্রা উদ্রেক খাবারগুলির মধ্যে একটি। ওটসের সাথে যোগ করুন অল্প বেরি, মধু এবং খেয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমান।

চ্যামোমিল চা
এটি খুবই সুগন্ধুযুক্ত, উদ্দীপক এবং সতেজতা প্রদানকারী পানীয়। স্নায়ুকে অবশ করে এটি ভালো নিদ্রার উদ্রেক করে। আয়ুর্বেদের মতে এটি হালকা অবশকারী পদার্থ হিসাবে কাজ করে। এটিতে থাকা ফ্ল্যাভনয়েড, এপিজেনিন যেটি মস্তিষ্কের বেনজোডায়াজেপিন রিসেপ্টরের সাথে যুক্ত হয়ে নিদ্রার উদ্রেক করে।

প্রচণ্ড তাড়া। অফিস ছুটতে হবে। হাতে সময় নেই। অতএব দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গপাগপ করে হাতের গোড়ায় যা পাচ্ছেন তা-ই গিলছেন । এটাই যদি রোজের অভ্যাস হয়ে থাকে শিগগিরি পাল্টান। কারণ, আপনি তো জানেনই না, তাড়াহুড়োর চোটে কত বড় সর্বনাশ করছেন নিজের। এভাবে খেলে রোজ একটু একটু করে অবসাদে (Stress) ডুবতে থাকবেন আপনি। স্বাদও পারেন না খাবারের। জানেন সেটা? এমন অজানা বিষয় সম্প্রতি জানিয়েছে জার্নাল অব কনজিউমার রিসার্চ (Journal of Consumer Research)।




শুধু কি তাই! কোন ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে খাচ্ছেন সেটাও নাকি স্বাদগ্রহণের পক্ষে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, জানিয়েছেন সমীক্ষকেরা। তাঁদের কথায়, দাঁড়ানোর বদলে যদি বসে শান্তিতে খান তাহলে স্বাদ আরও বেশি করে পাবেন। কারণ, ভঙ্গি, শরীরের ভারসাম্যের সঙ্গে স্বাদগ্রহণের বিষয়টি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। তাই দাঁড়ানোর থেকে বসে খেলে সবাই খাবারে বেশি স্বাদ পান। অনেক সময়েই দেখা যায়, যেসব বাচ্চারা খেতে ভালোবাসে না বা খাবার দেখলেই উল্টোদিকে পালায় তাদের ভুলিয়ে খাওয়াতে গিয়ে মা-বাবা জানালা বা কোথাো দাঁড় করিয়ে ঝপাঝপ করে খাওয়াতে থাকেন। দাঁড়ানোর পদ্ধতি যদি সঠিক হয় তাহলে বাচ্চারা অনেক সময়েই চুপচাপ খেয়ে নেয় । কিন্তু তা না হলে ওদের বিরক্তি আরও বাড়ে। কিছুতেই খেতে চায় না।

কেন এমনটা হয় জানেন? বিশেষজ্ঞদের মতে, দাঁড়িয়ে থাকার ফলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আমাদের নীচের দিকে আকর্ষণ করে। এতে শরীরের রক্ত নীচের দিকে প্রবাহিত হয়। এবং তা তুলে সারা শরীরে ছড়িয়ে দিতে কষ্ট হয় হৃদপিণ্ডের। ফলে বেড়ে যায় হৃদস্পন্দন। আর তাতেই বাড়তে থাকে হাইপো থ্যালামিক পিটুইটারি অ্যাড্রিনালিন (HPA)। স্ট্রেস হরমোনকে বাড়িয়ে দেয়।

আর শরীর অবসন্ন হলে কী করে খাবারের স্বাদ নেবেন! এমনকি, সামান্য শারীরিক সমস্যাতেই স্বাদু খাবারও বিস্বাদ হয়ে যায়। বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে সমীক্ষকেরা ৩৫- জনকে পিটা চিপস খেতে দিয়েছিলেন। এঁদের মধ্যে কিছু জন খেয়েছে দাঁড়িয়ে। বাকিরা খেয়েছেন বসে। যাঁরা দাঁড়িয়ে খেয়েছেন , তাঁরা পিটা চিপসের কোনও স্বাদই পাননি! যাঁরা আরাম করে বসে খেয়েছেন তাঁদের কাছে অমৃততুল্য চিপসের স্বাদ।

অসুখ-বিসুখ হলেই সুস্থ হতে মুঠো মুঠো ওষুধ সেবন করে থাকি। অথচ প্রকৃতি কত অকৃপণ ভাবে সাজিয়ে রেখেছে নানা প্রাকৃতিক উপাদান। যার সাহায্যে সহজে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই সুস্থ থাকা যায়। সেসবের মধ্যে আছে নানা ধরনের সবজি, ফল, মশলা এবং ভেষজ উপাদান। এর মধ্যে অন্যতম মেথি। আয়ুর্বেদ মতে, শরীর সুস্থ রাখতে মেথি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।


সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে মেথি চা দারুণ কার্যকরী? তাই যাঁরা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাঁদের সুস্থ থাকতে অনেক সময়েই মেথি চা পানের পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। সুগার ছাড়া অন্য আধি-ব্যাধিও দূর করে মেথি চা। জেনে নিন সেগুলো।

মেথি চায়ের উপকারিতা
সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে: এই মুহূর্তে বিশ্বে ক্রমশ বাড়ছে ডায়াবেটিস। আগাম সাবধানতার জন্য তাই শুরু করতেই পারেন মেথ চা-পান। বেঙ্গালুরুর পুষ্টিবিশেষজ্ঞ ডা. অঞ্জু সুদের মতে, ইনসুলিনের কার্য ক্ষমতা এবং পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় মেথি চা। ফলে, রোজ এই চায়ে চুমুক দেওয়া মানেই সুগার আপনার থেকে শতহস্ত দূরে।

ওবেসিটি কমায়: সকালে খালি পেটে এক কাপ মেথি চা মানেই হজম ক্ষমতা বেড়ে যাওয়া। একই সঙ্গে ঝরবে মেদও।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে পালাবে: মেথির মধ্যে থাকা অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণ করে হজমের যাবতীয় সমস্যা। যেমন, আলসার, অম্বর ইত্যাদি। একই সঙ্গে মেথির মধ্যে থাকা ফাইবার পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এতে দ্রুত হজম হয়।

হৃদরোগের সম্ভাবনা কমায়: রোজ সকালে মেথি চা মানেই কোলেস্টেরল কম। আর তাতে ধমনী, শিরার চর্বি থাকতে পারে না। এতে রক্ত চলাচল ভালো হয়। ভালো থাকে হার্ট।

কিডনি ভালো রাখে: রোজ মেথি চা পান করলে পরিষ্কার থাকে কিডনিও। মেথির প্রভাবে ইউরিন ক্লিয়ার থাকে। কিডনিতে স্টোন হওয়ার সম্ভাবনা কমে।

যেভাবে বানাবেন মেথি চা
এক চা-চামচ মেথি গুঁড়ো করে নিন। এক কাপ ফুটন্ত গরম জলে ওই গুঁড়ো মিশিয়ে দিন। এক চা-চামচ মধু মেশাতে পারেন। চাইলে রোজের চা পাতা বা তুলসী পাতাও মেশানো যেতে পারে এতে। সমস্ত উপকরণ দিয়ে মিনিট তিনেক ভিজিয়ে রাখুন। ছেঁকে নিয়ে গরমাগরম চুমুক দিন।


এস্ট্রোনমি বিষয়টিকে মানুষের আষাঢ়ে গল্পের বস্তু থেকে বিজ্ঞান রূপে মানুষের সামনে প্রতিষ্ঠা করার পেছনে যে দুজন বিজ্ঞানীর নাম প্রথমেই আসে তাদের নাম মোটামুটি সবারেই জানা: কোপার্নিকাস ও কেপলার। কোপার্নিকাস সর্ব প্রথম পৃথিবীকেন্দ্রিক বিশ্বজগতের ধারনা থেকে সূর্যকেন্দ্রিক(heliocentric system) বিশ্বজগতের ধারনা প্রতিষ্ঠা করেন।
কোপার্নিকাস
কোপার্নিকাস
অন্যদিকে কেপলার সর্ব প্রথম টাইকো ব্রাহের অবজারভেশনাল ডেটা ব্যবহার করে গ্রহ গুলোর সঠিক গতি পথের সমীকরণ নির্ণয় করেন। কেপলার তার সূত্রগুলো সম্পূর্ণ ব্রাহের সংগৃহীত তথ্য উপাত্ত থেকে নির্ণয় করে । তার যদিও অনেক পরে নিউটন তার মহাকর্ষ বলের সূত্র অবতারণা করে। আশ্চর্য হওয়ার মত ঘটনা হলেও সত্য যে নিউটনের সূত্র গ্রহ গুলোর গতির ঠিক একি ব্যখ্যা দেয়। কিন্তু নিউটনের কাজটি তত্ত্বীয়(এস্ট্রোফিজিক্স) কাজ অন্য দিকে কেপলারের কাজ পর্যবেক্ষণ প্রসূত(এস্ট্রোনমি)। দিনশেষে সবার উদ্দেশ্য একিঃ মহাবিশ্বকে সঠিক ভাবে ব্যাখ্যা করা।

তারও কিছু পরে গ্যালিলিওর টেলিস্কোপ আবিষ্কার মহাকাশ বিজ্ঞানকে এক নতুন মাত্রা দেয়। কিন্তু তখনো পর্যন্ত সবার ধারণ ছিল আমদের মহাবিশ্ব স্থির এবং আকৃতিতে নির্দিষ্ট । সব মহাজাগতিক বস্তু আমাদের নিজেস্ব মিল্কিওয়ের অন্তর্ভুক্ত সেটাই ছিল সবার বিশ্বাস। 
গ্যালিলিও

গ্যালিলিও

এস্ট্রোনমিতে এক্সট্রাগ্যলাক্টিক বলতে যা এখন বোঝায় তা তখনও মানুষের সামনে আসেনি । ১৯১৭ সালে তখনকার সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ মাউন্ট উইলসন প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই অবজারভেটরিতে এডউইন হাবল তার নিজেস্ব প্রজেক্টে কাজ করা কালীন (১৯২০) অনেক মহাজাগতিক বস্তু দেখতে পান যাদের এবসল্যুট ম্যগনিচুড থেকে দূরত্ব নির্ণয় করে হাবল আন্দাজ করতে পারেন যে ওই বস্তু গুলো আমাদের মিল্কি ওয়ের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে না। হাবলের কাজের আগেই মিক্লিওয়ের আকার আকৃতি নিয়ে কাজ শুরু হয়ে গিয়ে ছিল। কিন্তু হাবল-ই প্রথম মিল্কিওয়ের বাইরেও যে মিল্কিওয়ের মত আরও বস্তু মহাবিশ্বে থাকতে পারে তা আমাদের ভাবতে শিখান।হাবল সেই বস্তু গুলোর নামকরণ করেন এক্সট্রাগ্যলাক্টিক নেবিউলা (নেবিউলি বহুবচন)।

হাবল তখন ফটোগ্রাফিক প্লেটের ছবি দেখে আরও বুঝতে পারেন যে এই বস্তু গুলো মূলত দুই শ্রেণিতে বিভক্ত ঃ ইলিপ্টিক্যাল ও স্পাইরাল। হাবল তার নিজের ডেটা ও পূর্বেও কিছু ডেটা থেকে এই দুই শ্রেণিরকে আরও কিছু মধ্যবর্তী শ্রেণিতে বিভক্ত করেন যার পূর্ণ বর্ণনা পেপারটিতে আছে। এই শ্রেণিবিন্যাস হাবল সিকুয়েন্স নামে এখনো প্রচলিত। যদিও হাবলের কিছু অনুমান তখন ভুল ছিল যার উপর ভিত্তি করে তিনি শ্রেণিবিন্যাসটি করেন। তিনি ধারনা করেছিলেন যে গ্রেভিটেশনাল কলাপ্স থেকে প্রথম ইলিপ্টিক্যাল গ্যলাক্সি তৈরি হয় যা ইভল্যুশনের মাধ্যামে স্পাইরাল তৈরি হয় । কিন্তু পরবর্তীতে বিভিন্ন অব্জারভেশনে ও সিমুল্যেশনে প্রমাণিত হয় যে গ্যালাক্সি ক্লাসটারে স্পাইরালের মার্জারে ইলিপ্টিক্যাল তৈরি হয়।

হাবল
হাবলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি আসে ১৯২৯ সালে। বিজ্ঞানীরা তখন মিল্কি ওয়ের বাইরেও গ্যালাক্সি থাকতে পারে তা ভাবা শুরু করলেও তখনও তাদের ধারনা ছিল মহাবিশ্ব স্থির(স্ট্যাটিক)। আইনস্টাইন তখন তার জেনারেল রিলেটিভিটির কাজ শেষ করেন। তার ফিল্ড ইকোয়েশনে একটি অতিরিক্ত টার্ম যোগ করেন যা কসমোলজিক্যাল কন্সটেন্ট নামে পরিচিত। তিনি ও ধারনা করতেন স্ট্যাটিক ইউনিভার্সে । তাই তিনি ব্যখ্যা দেন এই কসমোলজিক্যাল কন্সটেন্টের কাজ হবে ম্যটারের গ্যাভিটিকে ব্যলান্স করে মহাবিশ্ব কে স্থির রাখা। কিন্তু হাবল ১৯২৯ সালে দেখান যে গ্যালাক্সি গুলো মিল্কিওয়ে থেকে নির্দিষ্ট বেগে(যা তাদের দূরত্বের উপর নির্ভরশীল) সরে যাচ্ছে। এই বেগকে তাদের রিসেশন ভেলসিটি বলা হয় । এই কাজ থেকে মোটামুটি এটা বুঝা যায় ইউনিভার্স স্ট্যাটিক নয়। হাবলের এই কাজটি তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ।

বিজ্ঞানীরা এখনো হাবল কন্সটেন্ট / কসমোলজিক্যাল কন্সটেন্ট কোনটার প্রিসাইজ মান নির্ণয় করে উঠতে পারেননি । তত্ত্বীয় কসমোলজিক্যাল কন্সটেন্টের মান অব্জারভেশনাল মান থেকে অনেক বেশি । এই কন্সটেন্ট সরাসরি ডার্ক এনার্জির সাথে জড়িত। তাই যেদিন বিজ্ঞানীরা তত্ত্ব থেকে সঠিক মান নির্ণয় করতে পারবেন সেদিন আমাদের কাছে মহাবিশ্বের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ রহস্য উন্মোচিত হবে। শুধু তাই নয় সেদিন কোয়ান্টাম জগত আর গ্রেভিটেশনাল জগতের মাঝেও একটা মেলবন্ধন স্থাপিত হবে ।

বিগ ব্যাং থেকে মহাবিশ্ব সূচনা, এটিই বর্তমানে কসমোলজির সুপ্রতিষ্ঠিত তত্ত্ব । বিগ ব্যাং এর পরে মহাবিশ্ব খুবি উষ্ণ, ঘন এবং অপটিক্যালি পুরু (অর্থাৎ কোনও ফোটন বাইরে বের হতে পারে না) এমন একটি প্লাজমা দশায় ছিল। Photon দৃঢ়ভাবে লেপটনিক(ইলেকট্রন-পজিট্রন ) , ব্যারোনিক(প্রোটন-নিউট্রন) এবং ডার্ক ম্যাটারের সঙ্গে যুক্ত ছিল(যাকে ফোটন-ম্যাটার কাপ্লিং বলা হয়)। অর্থাৎ ফোটন ম্যাটারের সাথে সক্রিয় ভাবে স্ক্যাটারিং ইন্টারেকশনে অংশ নিত তাই কোন ফোটন সেই প্লাজমা ভেদ করে বের হয়ে আসতে পারত না(এই সময়কে তাই ডার্ক পিরিয়ড বলা হয় )। বর্তমান বোঝার পরিপ্রেক্ষিতে, মহাবিশ্বের এস্কপোনেনসিয়াল সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া(ইনফ্লেশন পিরিয়ড) শুরু হওয়ার আগে ডার্ক এনার্জির উদ্ভব হয়নি। এটি একটি মিলিয়ন ডলার (অর্থাৎ নোবেল পুরস্কার বিজয়ী!) প্রশ্ন কেন ডার্ক এনার্জি বিগ ব্যাং এর সাথে সাথেই না হয়ে কিছু পরে কার্যকর হয়! এই সময়ের পূর্ব পর্যন্ত মহাবশ্ব ম্যাটার ডমিনেটেড ছিল।


যতদূর পর্যন্ত আমাদের পর্যবেক্ষণ নির্দেশ করে, প্রাথমিক মহাবিশ্বটি সম্পূর্ণ স্ট্রাকচারলেস ছিল। এর অর্থ দাঁড়ায় বর্তমানে আমরা যেসকল মহাজাগতিক বস্তু দেখতে পাই তার সবি একটি গ্যসিয়াস প্লাজমা থেকে পরবর্তী কালে ইভল্যুশনের মাধ্যমে তৈরি হয় । এই প্রবন্ধটি মূলত প্রথম প্রজন্মের তারকা গঠনের অর্থাৎ, একটি আদিম গ্যাস থেকে বর্তমান মহাবিশ্বে রূপান্তরের প্রক্রিয়ায় প্রথম যে ধাপ গুলো আমাদের মহাবিশ্ব অতিক্রম করে তার একটি সারসংক্ষেপ। সমস্ত তথ্য নীচে তালিকাভুক্ত পেপারটি থেকে সংকলিত হয়। আপনি যদি একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তবে এটি পড়তে দ্বিধা করবেন না!

আজকে যে সকল মহাজাগতিক কাঠামো আমরা দেখতে পাচ্ছি তা হল বৃহৎ আণবিক মেঘ(Giant moleculer clouds), তারকা, তারকা-ক্লাস্টার, ছায়াপথ, গ্যালাক্সি গ্রুপ এবং ক্লাস্টার। প্রথম প্রশ্নটি আমাদের মনে আসে: আমরা কীভাবে একটি প্রিমরডিয়াল(primordial) গ্যাস যা শুধুমাত্র ফোটন লেপ্টন এবং কিছু ব্যারিওনের খুব উষ্ণ প্লাজমা, তা থেকে একটি আণবিক মেঘের মতো কিছু পেতে পারি? আচ্ছা, আপনি গ্রাভিটেশনাল কলাপ্স এর কথা ভাবতে পারেন, কিন্তু আমার primordial গ্যাস এখনও যথেষ্ট উষ্ণ এবং প্রসারণশীল। তাছাড়া আমাদের গ্যাস এখনও কসমিক টাইম স্কেলে এমন একটি পর্যায়ে আছে যখন শুধু উইক নিউক্লিয়ার বল সক্রিয়(বিগব্যাং এর পরবর্তী ১০০ সেকেন্ড)। এই বল সকল প্রকারের বিটা ডিকের জন্য দ্বায়ি। এই বল যখন প্রথম সকল প্রকারের বিটা ডিকে গুলো শুরু করে এবং যখন এই ধাপ গুলোর মধ্যে তাপীয় ভারসাম্য থাকে না তখন ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়ার হার ভিন্ন হয়। যার ফলে ইলেক্ট্রন সংখ্যায় পজিট্রন উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং ইলেক্ট্রন-পজিট্রন জোড়াগুলির বিলুপ্তির পরে কেবল অতিরিক্ত ইলেকট্রন গুলি থেকে যায়। তৎকালীন প্রতিক্রিয়া হারের মধ্যে একটি খুব ছোট পার্থক্য আজকে আমরা যা দেখি তার চেয়ে অনেক ভিন্ন পরিস্থিতি করতে পারত(রিয়েকশন রেট সমান হলে হয়ত ইলেক্ট্রন-পজিট্রন জোড়াগুলির বিলুপ্তির পরে আর কিছুই অবশিষ্ট থাকত না ! )। এই দুর্বল প্রতিক্রিয়াগুলির সাথে আমরা “বিগ ব্যাং নিউক্লিয়াসিনথেসিস (বিবিএন)” যুগে প্রবেশ করি।

এখনও, যেতে একটি দীর্ঘ পথ! যখন সব দুর্বল প্রতিক্রিয়া শেষ হয়ে যায় তখন আমরা হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, ডিউটিরিয়াম এবং লিথিয়াম নিউক্লিয়ার গঠনের জন্য যে সবল নিউক্লয় বল প্রয়োজন সেই যুগে পৌছে যাই। বিবিএন যুগ লিথিয়াম নিউক্লিয়াস গঠনের সাথে শেষ হয়। কেন? কারণ, সম্প্রসারণের জন্য মহাবিশ্ব তখন কিছুটা তাপমাত্রা হারিয়েছে। সেই সাথে যখন কোন আয়ন গঠিত হয় তারা গরম গ্যাসের জন্য রেডিয়েটিভ কুলিং চ্যানেল তৈরি করে। কিভাবে? দ্রুত চলমান ফ্রি ইলেকট্রন এবং আয়নগুলির মধ্যে Collison আয়ন গুলির উচ্চ শক্তির শেলগুলি পূরণ করতে দেয় এবং কিছুপরে তারা ফোটন বিকিরণ করে নিম্ন শক্তির শেলে চলে আসতে পারে। এই ইলেকট্রন গুলি একটি ফোটন এব্জরব করে আবার প্লাজমায় ফিরে যেতে পারে। কিন্তু এই ইলেকট্রনটির গতি শক্তি পূর্বাপেক্ষা কম। যেহেতু গ্যাসীয় কণাগুলির গতি শক্তি কমে গেলে তাদের তাপমাত্রা কমে যায় তাই এভাবে গ্যাস ঠাণ্ডা হতে থাকে। প্রিমরডিয়াল গ্যাস ঠাণ্ডা হওয়ার কারনে এমন একটি অবস্থায় পৌঁছে যখন ফোটন আর ম্যাটারের সাথে সরাসরি স্ক্যাটারিং ইন্টারেকশনে অংশ নিতে পারে না এবং গ্যাস থেকে বের হয়ে যায় এবং মহাবিশ্ব “টেকনিক্যালি” আলোকিত হয় (প্রথম বিকিরণ বিগব্যাং এর 10k সেকেন্ডের পরে উৎপন্ন হয় যা আমরা আজকের কসমিক মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রউন্ড (সিএমবি) আকারে দেখতে পাই! )। গ্যাস ঠান্ডা হওয়ার পরে লিথিয়ামের পর আর পারমাণবিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় না। এই সময় মহাবিশ্বের তাপমাত্রা 10 ^ 6 কেলভিনে পৌঁছে।

এখন আমরা একটি সময়ে আছি যেখানে গ্রাভিটেশনাল ইন্সটাবিলিটি কাঠামো গঠনের বীজ হিসাবে কাজ করতে পারেন। কিন্তু আমাদের প্রিমরডিয়াল গ্যাস এখনও গরম এবং আমাদের অতিরিক্ত কুলিং চ্যানেল প্রয়োজন। কুলিং শুরু হওয়ার পরে H2 অণু তৈরি হয়। পরবর্তীতে গঠিত H2 অণুগুলির রোটেসনাল এবং ভাইব্রেশনাল এনার্জি স্টেট গুলো কুলিং চ্যানেল হিসেবে কাজে আসে। যখন গ্যাস যথেষ্ট পরিমাণে ঠান্ডা হয় তখন বিপুল পরিমাণ গ্যাসের গ্রাভিটেশনাল কলাপ্স সম্ভব হতে পারে যা প্রথম প্রজন্মের তারা গঠনের সূত্রপাত করে (যা প্রায়শই পপুলেশন-3 তারা হিসাবে পরিচিত)। গ্রাভিটেশনাল ইন্সটাবিলিটি এবং গ্রাভিটেশনাল কলাপ্স বিভিন্ন বাধা অতিক্রম করে কিভাবে একটি তারকার জন্ম দিতে পারে তা বিশদ ভাবে আলোচনার দাবি রাখে, সম্ভবত কিছু পরেই!

১৯৩০ সালে ‘প্লুটো’ গ্রহ আবিষ্কারের পর থেকে স্কুল পড়ুয়া শিশুরা পড়ে এসেছে যে, সৌরজগতে মোট গ্রহের সংখ্যা ৯ টি। কিন্তু বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে এসে এই ধারণাটি বদলে যায়। তখন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা দাবি তুলতে থাকেন যে, প্লুটো আসলে কোন গ্রহ নয়। সবশেষে ‘ইন্টারন্যাশনাল এস্ট্রোনোমিকাল ইউনিয়ন’ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, প্লুটোকে ‘বামুন গ্রহ’ বলে ডাকা হবে।

তবে ২০ জানুয়ারি, ২০১৬ তে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সৌরজগতে আরেকটি গ্রহের অস্তিত্বের প্রমাণ পান, যাকে তারা নাম দিয়েছে ‘প্ল্যানেট নাইন’। এটি পৃথিবীর চেয়ে ১০ গুণ এবং প্লুটোর চেয়ে ৫০০০ গুণ ভারী।

আজ আমরা মূলতঃ সৌরজগতের ৮ টি প্রকৃত গ্রহ নিয়ে আলোচনা করছি।


বুধ গ্রহ (Mercury)
সূর্য থেকে সবচেয়ে কাছের গ্রহ হচ্ছে বুধ। পৃথিবীর চাঁদ থেকে আকারে অল্প একটু বড় বুধ গ্রহ। বুধের সূর্য দ্বারা আলোকিত হওয়া দিকটিতে ৮৪০ ডিগ্রী ফারেনহাইট (৪৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াস) পর্যন্ত তাপমাত্রা উঠতে পারে। অন্যদিকে অন্ধকার দিকটিতে তাপমাত্রা -২০০ ডিগ্রী থেকে -৩০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বুধগ্রহের নিজস্ব কোন বায়ুমণ্ডল নেই যার ফলে এখানে প্রায়ই উল্কাপাত হয়ে থাকে। তাই পৃথিবীর চাঁদের মতো বুধ গ্রহের বুকেও অনেক বিশাল বিশাল গর্ত আছে, যা কিনা মহাকাশ থেকেও অবলোকন করা সম্ভব। নাসার ‘মেসেঞ্জার’ নামের মহাকাশযানটি এর ৪ বছর ধরে চলতে থাকা মিশনে বুধ গ্রহের এমন এমন নতুন তথ্য আবিষ্কার করেছে, যা জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেছে।
আবিষ্কার: প্রাচীনকালেই এর প্রথম আবিষ্কার হয়েছে কারণ পৃথিবী থেকে খালি চোখেই গ্রহটি দেখা যায়।
ইংরেজিতে ‘মার্কারি’ নামকরণ: রোমান ঈশ্বরদের বার্তাবাহকের নামানুসারে।
ব্যাস: ৩,০৩১ মাইল (৪,৮৭৮ কিলোমিটার) ।
কক্ষপথে একবার ঘুরতে সময় নেয়: ৮৮ পার্থিব দিন।
দিন: ৫৮.৬ পার্থিব দিন।


শুক্র (Venus)
সূর্যের দ্বিতীয় গ্রহের নাম শুক্র গ্রহ। শুক্র গ্রহ খুবই উত্তপ্ত অবস্থায় থাকে, এমনকি বুধ গ্রহের চেয়ে এর তাপমাত্রা বেশি। শুক্র গ্রহের নিজস্ব বায়ুমণ্ডল আছে তবে এটি বিষাক্ত। এই গ্রহের পৃষ্ঠতলে অত্যন্ত চাপ থাকার দরুন যে কোন মানুষ এখানে অবতরণ করলে নিমেষের মধ্যে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়তে পারেন। বিজ্ঞানীরা শুক্র গ্রহের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘গ্রিন হাউস প্রক্রিয়া’র অংশ হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। এই গ্রহের আকার এবং গঠন অনেকটা পৃথিবীর মতনই। ‘গ্রিন হাউস প্রক্রিয়া’য় যেভাবে সূর্যের তাপমাত্রা পৃথিবীতে বন্দি হয়ে থাকে তেমনটিই বর্তমানে বহুলভাবে সংঘটিত হচ্ছে শুক্র গ্রহের অভ্যন্তরে। আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে, সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহগুলি নিজের অক্ষের উপর যেই দিকে অনবরত ঘুরে, শুক্র গ্রহ ঘুরে ঠিক তার উল্টো দিকে।

প্রাচীন গ্রিকরা মনে করত যে, শুক্র গ্রহ আসলে দুটি ভিন্ন বস্তু, যার একটি ভোরের আকাশে দেখা যেত, আরেকটি দেখা যেত সন্ধ্যার আকাশে। পরবর্তীতে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করলেন যে দুটো বস্তু আসলে একটি গ্রহ মাত্র। সূর্য এবং চাঁদ ব্যতীত পৃথিবীর আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল বস্তু হচ্ছে শুক্র। এতটাই উজ্জ্বল যে, অনেক বাঙ্গালির কাছে এটি শুকতারা নামেও সুপরিচিত।

আবিষ্কার: প্রাচীনকালেই এর প্রথম আবিষ্কার হয়েছে কারণ পৃথিবী থেকে খালি চোখেই গ্রহটি দেখা যায়।
ইংরেজিতে ‘ভেনাস’ নামকরণ: ভালবাসা ও সৌন্দর্যের রোমান দেবীর নামানুসারে।
ব্যাস: ৭,৫২১ মাইল (১২,১০৪ কিলোমিটার)।
কক্ষপথে একবার ঘুরতে সময় নেয়: ২২৫ পার্থিব দিন।
দিন: ২৪১ পার্থিব দিন।
পৃথিবী
সূর্যের তৃতীয় গ্রহের নাম পৃথিবী। পৃথিবীকে প্রায়ই পানির জগত নামেও অবহিত করা হয়, কারণ এর উপরিভাগের দুই-তৃতীয়াংশই হচ্ছে পানি। এটিই সৌরজগতের একমাত্র গ্রহ যেটিতে প্রাণের সঞ্চালন হতে পারে। প্রাণের সঞ্চালনের জন্য পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে রয়েছে প্রচুর নাইট্রোজেন এবং অক্সিজেন। পৃথিবী তার নিজ অক্ষে একবার ঘূর্ণন করে প্রায় ১,৫৩২ ফুট/সেকেন্ড (৪৬৭ মিতার/সেকেন্ড) গতিতে। পৃথিবীর নিরক্ষরেখায় এই গতি পরিমাপ করা হয়েছে প্রায় ১০০০ মাইল/ঘণ্টা (১,৬০০ কিমি/ঘণ্টা)। আর সূর্যের চারিদিকে আমাদের গ্রহটি ঘুরছে প্রায় ১৮ মাইল প্রতি সেকেন্ড(২৯ কিমি প্রতি সেকেন্ড) গতিতে।

ব্যাস: ৭,৯২৬ মাইল (১২,৭৬০ কিমি)।
কক্ষপথে একবার ঘুরতে সময় নেয়: ৩৬৫.২৪ দিন।
দিন: ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট।

মঙ্গল গ্রহ (Mars)
সূর্যের চতুর্থ গ্রহের নাম মঙ্গল গ্রহ, একটি শুষ্ক ধূলিময় বিস্তীর্ণ এলাকা। আয়রন অক্সাইড ধূলিকণার দরুন এই গ্রহটিকে লালচে বর্ণের দেখায়। পৃথিবীর সাথে মঙ্গল গ্রহের অনেক ধরণের মিল দেখা যায়। এটির রয়েছে পাহাড়-পর্বত, শিলাময় অঞ্চল। পৃথিবীর মতো মঙ্গল গ্রহেও টর্নেডোর আবির্ভাব পরিলক্ষিত হয়। তবে এই টর্নেডোর সাথে থাকে প্রচুর পরিমাণ ধূলিকণা। মঙ্গল গ্রহে তুষারপাতও হয়ে থাকে, পানির অস্তিত্ব পাওয়া গেলেও এটি রয়েছে পুরো জমাটবদ্ধ অবস্থায়। যদিও আজ এই গ্রহটি ঠাণ্ডা এবং মরুভূমির ন্যায়, কিন্তু বিজ্ঞানীদের ধারণা, পূর্বে কোন এক সময়ে এটিতে পানি তরল অবস্থায় ছিল এবং উষ্ণ আবহাওয়া ছিল। মঙ্গলের আবহাওয়া এতটাই পাতলা যে এর পৃষ্ঠতল কখনই তরল পানি ধারণ করতে পারে না। বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে, প্রাচীন মঙ্গল গ্রহের প্রাণ সরবরাহের ক্ষমতা ছিল। তারা এখনও মঙ্গলে পূর্বপ্রাণের অস্তিত্বের আশা ছাড়েননি।
আবিষ্কার: প্রাচীনকালেই এর প্রথম আবিষ্কার হয়েছে, কারণ পৃথিবী থেকে খালি চোখেই গ্রহটি দেখা যায়।
ইংরেজিতে ‘মার্স’ নামকরণ: রোমান যুদ্ধ দেবতার নামানুসারে।
ব্যাস: ৪,২১৭ মাইল (৬,৭৮৭ কিলোমিটার)।
কক্ষপথে একবার ঘুরতে সময় নেয়: ৬৮৭ পার্থিব দিন।
দিন: ১ পার্থিব দিনের চেয়ে অল্প বেশি (২৪ ঘণ্টা ৩৭ মিনিট)।

বৃহস্পতি গ্রহ (Jupiter)
বৃহস্পতি হচ্ছে সূর্যের পঞ্চম গ্রহ। বৃহস্পতি একটি দানবাকার গ্রহ। সৌরজগতে এটির আকারই সবচেয়ে বড়। এই গ্রহের প্রায় পুরোটুকুই বিভিন্ন রকমের গ্যাস দ্বারা পরিপূর্ণ। এসব গ্যাসগুলোর মধ্যে হাইড্রোজেন এবং হিলিয়াম উল্লেখযোগ্য। এই গ্রহের ঘূর্ণাবর্তে পাক খেতে থাকা মেঘগুলো নানা গ্যাসীয় মিশ্রণের ফলে বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। এই গ্রহের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর লালচে রঙের বৃহৎ দাগ, যেটি কিনা মূলত একটি দৈত্যাকার ঘূর্ণিঝড়। এই ঘূর্ণিঝড়টি হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসছে এবং এখনও এটি চলমান। বৃহস্পতি গ্রহের একটি শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্র রয়েছে। বিশাল এই গ্রহের উপগ্রহের সংখ্যাও কম না, প্রায় ১২ টি। সবমিলে বৃহস্পতি ও উপগ্রহগুলোকে ছোট খাট সৌরজগত বললেও ভুল হবে না।

আবিষ্কার: প্রাচীনকালেই এর প্রথম আবিষ্কার হয়েছে কারণ পৃথিবী থেকে খালি চোখেই গ্রহটি দেখা যায়।
ইংরেজিতে ‘জুপিটার’ নামকরণ: রোমান দেবতাদের শাসকের নামানুসারে।
ব্যাস: ৮৬,৮৮১ মাইল (১৩৯,৮২২ কিলোমিটার)।
কক্ষপথে একবার ঘুরতে সময় নেয়: ১১.৯ পার্থিব বছর।
দিন: ৯.৮ পার্থিব ঘণ্টা।


শনি গ্রহ (Saturn)
সৌরজগতের ষষ্ঠ গ্রহটি হল শনি গ্রহ। শনি গ্রহ তার বলয়ের জন্য সুপরিচিত। ইটালিয়ান গণিতবিদ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গালিলি সর্বপ্রথম ১৬০০ শতাব্দীর শুরুর দিকে এই গ্রহটি পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি প্রথমে এটিকে তিনটি একসাথে লেগে থাকা বস্তু মনে করেছিলেন যেহেতু শনির মাঝে বৃহৎ বলয় বিদ্যমান ছিল। তিনি তখনও এই বলয়টির কথা জানতেন না। ভ্রান্ত ধারণায় মগ্ন এই জ্যোতির্বিজ্ঞানী তার আবিষ্কারের প্রমাণ স্বরূপ তার নোটবইয়ে একটি ছোট চিত্র এঁকে যান যার মধ্যে ছিল একটি বড় বৃত্ত আর দুইটি ছোট বৃত্ত। প্রায় ৪০ বছর পর ডাচ জ্যোতির্বিজ্ঞানী ক্রিশ্চিয়ান হাইগেন্স প্রস্তাব করেন যে এই বস্তুটি আসলে একটি বলয় সংবলিত গ্রহ।

শনি গ্রহের বলয়টি মূলত বরফ এবং শিলা দ্বারা গঠিত। বর্তমান কালের বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত নন যে, ঠিক কিভাবে এই বলয়টির উদ্ভব হয়েছে। এই গ্যাসীয় গ্রহটির প্রায় পুরোটা জুড়েই রয়েছে হাইড্রোজেন আর হিলিয়াম। শনি গ্রহের অগণিত উপগ্রহ রয়েছে। তাদের মধ্যে টাইটান উপগ্রহটি সবচেয়ে বড়।

আবিষ্কার: প্রাচীনকালেই এর প্রথম আবিষ্কার হয়েছে কারণ পৃথিবী থেকে খালি চোখেই গ্রহটি দেখা যায়।
ইংরেজিতে ‘স্যাটার্ন’ নামকরণ: রোমান কৃষি দেবতার নামানুসারে।
ব্যাস: ৭৪,৯০০ মাইল (১২০,৫০০ কিলোমিটার)।
কক্ষপথে একবার ঘুরতে সময় নেয়: ২৯.৫ পার্থিব বছর।
দিন: প্রায় ১০.৫ পার্থিব ঘণ্টা।

ইউরেনাস গ্রহ (Uranus)
সূর্যের সপ্তম গ্রহ হচ্ছে ইউরেনাস যেটি কিনা একটি চ্যাপ্টা বলের মতো দেখতে। এটিই একমাত্র দানব গ্রহ যার নিরক্ষরেখা কক্ষপথের ৯০ ডিগ্রী কোণে অবস্থিত অর্থাৎ এটি আড়াআড়ি ভাবে সূর্যের চারিদিকে ঘুরে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে গ্রহটি পূর্বে অন্য আরেকটি বৃহৎ আকারের গ্রহ স্বরূপ বস্তুর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল যার ফলে এটি সমকোণে কাত হয়ে গিয়েছে এবং এর নিরক্ষরেখাও পরিবর্তিত হয়েছে। এমন নিরক্ষরেখার দরুন ইউরেনাস একটি চরম মৌসুমের শিকার হয়, যেটি প্রায় টানা ২০ বছরের বেশি স্থায়ী হয়। এছাড়া গ্রহটির একটি মেরু টানা ৮৪ পার্থিব বছর সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে। ইউরেনাসের আকার অনেকটা নেপচুনের মতই। ইউরেনাসের আবহাওয়ায় মিথেনের উপস্থিতির দরুন এটির নীল-সবুজ আভা পরিলক্ষিত হয়। এটির অসংখ্য উপগ্রহ আছে। গ্রহের চারদিকে একটি অস্পষ্ট বলয় দেখা যায়।

আবিষ্কার: উইলিয়াম হার্শেল ১৭৮১ সালে আবিষ্কার করেন(তার পূর্বে এটিকে তারা মনে করা হত)।
ইংরেজিতে ‘ইউরেনাস’ নামকরণ: ইউরেনাস হচ্ছে প্রাচীন পুরাণে স্বর্গের ব্যক্তিরূপ।
ব্যাস: ৩১,৭৬৩ মাইল (৫১,১২০ কিলোমিটার)।
কক্ষপথে একবার ঘুরতে সময় নেয়: ৮৪ পার্থিব বছর।
দিন: প্রায় ১৮ পার্থিব ঘণ্টা।

নেপচুন গ্রহ (Neptune)
সৌরজগতের ৮ম গ্রহের নাম নেপচুন। নেপচুন গ্রহ শক্তিশালী বায়ুপ্রবাহের জন্য খ্যাত। মাঝে মাঝে নেপচুনের এই বায়ুপ্রবাহ শব্দের গতিকেও ছাড়িয়ে যায়। নেপচুন সূর্য থেকে অনেক দূরে, ফলে এটি অনেক ঠাণ্ডা একটি গ্রহ। সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্বের প্রায় ৩০ গুণ দূরে রয়েছে নেপচুন। এটির রয়েছে শিলা দ্বারা গঠিত কেন্দ্র। নেপচুনই প্রথম গ্রহ যেটির অস্তিত্ব গণিতের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা অনুমান করেছিলেন এটি শনাক্ত হওয়ার আগেই। ইউরেনাসের অনিয়মিত কক্ষপথের জন্য ফ্রেঞ্চ জ্যোতির্বিজ্ঞানী আলেক্সিস বুভার্ড নেপচুনের মহাকর্ষীয় টানকে দায়ী করেছিলেন। জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী জোয়ান গল গাণিতিক হিসাব নিকাশের মাধ্যমে টেলিস্কোপে নেপচুনকে খুঁজে বের করেন। নেপচুন পৃথিবী থেকে প্রায় ১৭ গুণ বড়।

আবিষ্কার: ১৮৪৬ ।
ইংরেজিতে ‘নেপচুন’ নামকরণ: রোমান জল দেবতার নামানুসারে।
ব্যাস: ৩০,৭৭৫ মাইল (৪৯,৫৩০ কিলোমিটার)।
কক্ষপথে একবার ঘুরতে সময় নেয়: ১৬৫ পার্থিব বছর।
দিন: প্রায় ১৯ পার্থিব ঘণ্টা।

অন্যান্য গ্রহ
‘প্লুটো’ ২০০৬ সালে পূর্ণগ্রহের মর্যাদা হারিয়েছে। এটিকে বামুন গ্রহ হিসেবে অভিহিত করা হয়। প্লুটোর আকার পৃথিবীর চাঁদের চেয়েও ছোট। এই গ্রহটি মাঝে মাঝে নেপচুনের কক্ষপথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে থাকে। ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত প্লুটোকে একটি গ্রহ হিসেবে অভিহিত করা হত।

‘প্ল্যানেট নাইন’ নামের আরেকটি নতুন গ্রহের সন্ধানও পেয়েছে বিজ্ঞানীরা যেটির কক্ষপথ পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে আরও ৬০০ গুণ লম্বা। সূর্য থেকে এই কক্ষপথ নেপচুনের কক্ষপথেরও ২০ গুণ বেশি দূরত্বে অবস্থিত। তবে এই গ্রহটি এখনও বিজ্ঞানীরা সরাসরি দেখেননি। সৌরজগতের একেবারে শেষ প্রান্তে অবস্থিত বরফীয় বস্তুগুলোর উপর মহাকর্ষীয় প্রভাবের উপর ভিত্তি করে এই গ্রহের উপস্থিতি অনুমিত হয়েছে।

বাংলাদেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ছয়মাস পরে নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রভিত্তিক যে ফলাফল প্রকাশ করেছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে অন্তত ১৯৭ কেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদাও স্বীকার করেছেন, শতভাগ ভোট পড়া স্বাভাবিক ঘটনা নয়।
ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, অন্তত ১৮৮৯ কেন্দ্রে ৯৫ থেকে ৯৯ শতাংশ ভোট পড়েছে।
একাশদ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভর্তি এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা ভোটারদের বাধা দেয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
ভোট কেন্দ্রের এ চিত্র নির্বাচনী ব্যবস্থার জন্য কী অর্থ বহন করছে?




প্রতি বছর বিশ্বের প্রাকৃতিক নিদর্শন ও নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে তার গুরুত্বের জন্য বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়।

এবার ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি আজারবাইজানের বাকুতে ৪৩তম বৈঠকে বসেছে।
সেখানে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নতুন কোন কোন যায়গাগুলোকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হবে।
ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় তারা যেসব নতুন নিদর্শন বা স্থানের নাম সংযুক্ত করেছেন তার কয়েকটি ছবি।

                                              আইসল্যান্ডের ভাখনাইওকুল ন্যাশনাল পার্ক

আইসল্যান্ডের ভাখনাইওকুল ন্যাশনাল পার্কআইসল্যান্ডের মোট সীমানার ১৪ শতাংশ জুড়েই রয়েছে এই ভাখনাইওকুল ন্যাশনাল পার্ক।
বরফে আচ্ছাদিত এবং আগ্নেয়গিরির বৈশিষ্ট্য সম্বলিত পুরো অঞ্চলটি দারুণ দৃষ্টিনন্দন।
এখানে বিশাল অঞ্চল জুড়ে রয়েছে শুকিয়ে যাওয়া অগ্নুৎপাত।

ফ্রান্সের অস্ট্রাল ভূমি ও সমুদ্র


অনেকগুলো দ্বীপ সম্বলিত এই অঞ্চলটি।
বিশ্বের সবচাইতে বেশি পাখি এবং সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণী বাস করে এখানে।
বিরল কিং পেঙ্গুইন দেখতে পাওয়া যাবে এখানে গেলে।

ভারতের জয়পুর নগরী


ভারতের উত্তর পশ্চিমে রাজস্থান প্রদেশের রাজধানী জয়পুরকে বলা হয় "গোলাপি নগরী"।
কারণ শহরের ভবনগুলোকে দুর থেকে গোলাপি মনে হয়।
এখানে বহু প্রাচীন ভবন রয়েছে। এমনকি শহরটি প্রথম যখন প্রতিষ্ঠা হয় সেই ১৭২৭ সালের সময়কার ভবনও রয়েছে।
দারুণ সব কারুকার্য দিয়ে সাজানো এসব ভবন।

জাপানের প্রাচীন সমাধি

জাপানের ওসাকা শহরে এরকম ৪৯ টি প্রাচীন সমাধি রয়েছে।
এগুলো তৈরি হয়েছে তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ শতাব্দী। এই সমাধিগুলোর নানান আকৃতির।
যেমন এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে তালার ছিদ্রের মতো আকৃতির সমাধি। এটির নামকরণ করা হয়েছে ২৯০ খ্রিষ্টাব্দে জন্মানো সম্রাট নিনতোকুর নামে।
এটি জাপানের সর্ববৃহৎ সমাধি ।

ইরাকের ব্যাবিলন

ইরাকের অবস্থিত প্রাচীন মেসোপটেমিয়া নগরীকে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বহুদিন যাবত চেষ্টা চালাচ্ছিল ইরাকের কর্তৃপক্ষ।
দেশটির যুদ্ধ ও সংঘাতময় রাজনীতির কারণে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্যাবিলন নগরী।
তবে সম্প্রতি এর অতীত গৌরব সংরক্ষণে নানা ধরনের কাজ চলছে।

বাগান, মিয়ানমার

মিয়ানমারের প্রাচীন রাজধানী বাগান।
ছবিতে যেগুলো দেখছেন এগুলো বৌদ্ধ মন্দির। সবুজ প্রকৃতির মধ্যে এমন হাজার মন্দির আগে থেকেই পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।

লাওসের বয়াম সদৃশ প্রাচীন স্থাপনা

লাওসের ঝিংখাওয়াং অঞ্চলে পাথর দিয়ে তৈরি এরকম হাজার হাজার বয়াম সদৃশ বস্তু রয়েছে।
প্রত্নতত্ত্ববিদরা মনে করেন এগুলো লৌহ যুগে তৈরি। কেন এগুলো তৈরি করা হয়েছিলো সেটি এখনো অনেক রহস্যময়।
অনেক প্রত্নতত্ত্ববিদ মনে করেন এগুলো সম্ভবত মরদেহ সৎকারে ব্যবহৃত হতো।

 ইংল্যান্ডের এসব স্টেডিয়ামের একটি লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে –সচারচর যেমন আকৃতির স্টেডিয়াম দেখা যায়, এগুলো তেমন গোলাকার নয়।
চলুন দেখি কোনটার কেমন আকার
লর্ডস

লর্ডস, লন্ডন
ধারণ ক্ষমতা: ৩০,০০০
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বোচ্চ রান: ৩৩৪ (ভারতের বিপক্ষে ইংল্যান্ড, ১৯৭৫)
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বনিম্ন রান: ১০৭ (ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা, ২০০৩)
কার্ডিফ ওয়েলস স্টেডিয়াম, কার্ডিফ
কার্ডিফ ওয়েলস স্টেডিয়াম, কার্ডিফ
ধারণ ক্ষমতা: ১৫,৬৪৩
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বোচ্চ রান: ৩৮৬ (বাংলাদেশের বিপক্ষে ইংল্যান্ড, ২০১৯)
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বনিম্ন রান: ১২৫ (দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আফগানিস্তান, ২০১৯)
ব্রিস্টল কাউন্টি গ্রাউন্ড
ব্রিস্টল কাউন্টি গ্রাউন্ড, ব্রিস্টল
ধারণ ক্ষমতা: ১৭,৫০০
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বোচ্চ রান: ৩৬৯ (ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইংল্যান্ড, ২০১৭)
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বনিম্ন রান: ৯২ (ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ে, ২০০৩)
এজবাস্টন, বার্মিংহাম


এজবাস্টন, বার্মিংহাম
ধারণ ক্ষমতা: ১৫,৬৪৩
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বোচ্চ রান: ৩৮৬ (বাংলাদেশের বিপক্ষে ইংল্যান্ড, ২০১৯)

ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বনিম্ন রান: ১২৫ (দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আফগানিস্তান, ২০১৯)
হেডিংলি, লীডস
হেডিংলি, লীডস
ধারণ ক্ষমতা: ১৮,৩৫০

ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বোচ্চ রান: ৩৫১ (পাকিস্তানের বিপক্ষে ইংল্যান্ড, ২০১৯)
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বনিম্ন রান: ৯৩ (অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ড, ১৯৭৫)
দি ওভাল, লন্ডন
দি ওভাল, লন্ডন
ধারণ ক্ষমতা: ২৪,৫০০
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বোচ্চ রান: ৩৯৮ (ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ড, ২০১৫)
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বনিম্ন রান: ১০৩ (দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইংল্যান্ড, ১৯৯৯

ওল্ড ট্যাফোর্ড, ম্যানচেস্টার
ধারণ ক্ষমতা: ২৬,০০০
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বোচ্চ রান: ৩৩৪ (আফগানিস্তানের বিপক্ষে ইংল্যান্ড, ২০১৯)
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বনিম্ন রান: ৪৫ (ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কানাডা, ১৯৭৯)
ট্রেন্ট ব্রিজ, নটিংহ্যাম
ট্রেন্ট ব্রিজ, নটিংহ্যাম
ধারণ ক্ষমতা: ১৭,৫০০
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বোচ্চ রান: ৪৮১ (অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ড, ২০১৮)
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বনিম্ন রান: ৮৩ (ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকা, ২০০৮)
দ্য রিভারসাইড, চেস্টার-লে-স্ট্রিট


দ্য রিভারসাইড, চেস্টার-লে-স্ট্রিট
ধারণ ক্ষমতা: ১৭,০০০
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বোচ্চ রান: ৩৩৮ (ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শ্রীলংকা, ২০১৯)
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বনিম্ন রান: ৯৯ (শ্রীলংকার বিপক্ষে ইংল্যান্ড, ২০১৪)
হ্যাম্পশায়ার বোল, সাউদাম্পটন
হ্যাম্পশায়ার বোল, সাউদাম্পটন
ধারণ ক্ষমতা: ২৫,০০০-এর মত
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বোচ্চ রান: ৩৭৩ ( পাকিস্তানের বিপক্ষে ইংল্যান্ড, ২০১৯)
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বনিম্ন রান: ৬৫ (অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্র, ২০০৪)
কাউন্টি গ্রাউন্ড, টনটন
কাউন্টি গ্রাউন্ড, টনটন
ধারণ ক্ষমতা: ১২,৫০০-এর মত
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বোচ্চ রান: ৩৭৩ (শ্রীলংকার বিপক্ষে ভারত, ১৯৯৯)
ওয়ানডেতে এই মাঠে সর্বনিম্ন রান: ১৭২ (নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আফগানিস্তান, ২০১৯)