১৯৯৯ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত পাঁচটি বিশ্বকাপ খেলেছে বাংলাদেশ আর একটিতে খেলতে যাচ্ছে। কেমন ছিল অতীতের সে জার্সিগুলো? দেখে নিন এক ঝলকে।
বিশ্বকাপ ১৯৯৯, ইংল্যান্ড
১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েই বিশ্বকাপ ক্রিকেটে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল বাংলাদেশ। ১৯৯৯ সালের ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ নিয়ে তাই দেশের মানুষের আগ্রহের মাত্রাটা ছিল অন্য মাত্রার। বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ যতগুলো ওয়ানডে খেলেছিল, তার বেশির ভাগই অবশ্য খেলেছিল ক্রিকেটের চিরাচরিত সাদা পোশাকে। তাই ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসরে প্রথমবারের মতো খেলতে নেমে বাংলাদেশের জার্সি কেমন হবে, সেটি নিয়ে মানুষের আগ্রহ ছিল। ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর জার্সি ও আনুষঙ্গিক পোশাক সরবরাহ করেছিল আয়োজকেরাই। জাপানের বিখ্যাত ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাসিক্‌স বিশ্বকাপে প্রতিটি দলের জার্সি সরবরাহ করে। সেবার বাংলাদেশের জার্সিটি ঠিক জাতীয় পতাকার রঙে ছিল না। অলিভ সবুজের জার্সিটির বুকে ছিল সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারের হলুদের ওপর কালো ডোরাকাটা। কলার ছিল হলুদ রঙের। এই জার্সি পড়েই অভিষেক বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ড ও পাকিস্তানকে হারিয়ে দেশের মানুষকে আনন্দে ভাসিয়েছিল আমিনুল ইসলামের বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

 বিশ্বকাপ ২০০৩, দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে, কেনিয়া
২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর এটি ছিল বাংলাদেশের প্রথম বিশ্বকাপ। অনেক আশা নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা গেলেও সেবার বাংলাদেশের ফল ছিল যাচ্ছেতাই। কানাডা ও কেনিয়ার মতো দুটি দলের কাছে হেরে দেশের মানুষকে হতাশ করেছিল খালেদ মাসুদের দল। এই বিশ্বকাপ থেকেই জার্সির দায়িত্ব পুরোপুরি চলে আসে সংশ্লিষ্ট ক্রিকেট বোর্ডের হাতে। সেবার বাংলাদেশের জার্সি ছিল এজে স্পোর্টসের তৈরি। সবুজের মধ্যে লাল বর্ডার দেওয়া জার্সিটি ছিল পুরোপুরি জাতীয় পতাকার আদলে।

বিশ্বকাপ ২০০৭, ওয়েস্ট ইন্ডিজ
এ বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচেই ভারতকে হারিয়ে আলোড়ন তুলেছিল বাংলাদেশ। ত্রিনিদাদের পোর্ট অব স্পেনে এই ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে হেরেই বিশ্বকাপ থেকে ভারতীয় দলের বিদায় ত্বরান্বিত হয়েছিল। হালকা সবুজ রঙের এই জার্সির কলার ছিল লাল। জার্সির দুই পাশে ছিল হলুদ বর্ডার। কেবল ভারত নয়, এ বিশ্বকাপে সুপার এইটে উঠে দক্ষিণ আফ্রিকাকেও হারিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরে হরিষে বিষাদের সাক্ষী হয়েছিল হাবিবুল বাশারের দল।


বিশ্বকাপ ২০১১, ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা

যৌথ আয়োজনের এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিটি ম্যাচই ছিল ঘরের মাঠে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ২০১১ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জার্সি নিয়ে ভিন্নধর্মী এক পদক্ষেপ নিয়েছিল। আয়োজিত হয়েছিল নকশা প্রতিযোগিতা। কথা ছিল নির্বাচিত সেরা নকশাটি বেছে নেওয়া হবে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জার্সি হিসেবে। তবে সেটি শেষ পর্যন্ত হয়নি। বিশেষ কারণে সেরা নকশাটি বিশ্বকাপের জার্সির জন্য নেওয়া যায়নি। তবে যে নকশাটি নেওয়া হয়েছিল, সেটিও কম আকর্ষণীয় ছিল না। সবুজের মধ্যে লাল ও হলুদ বর্ডার দেওয়া এই জার্সির নিচের অংশে ছিল বিশেষ জলছাপ। বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ড, হল্যান্ড ও ইংল্যান্ডকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রায় দোরগোড়ায় পৌঁছে গেলেও রান রেটে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তবে এ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একশ রানের নিচে গুটিয়ে যাওয়া বড় কলঙ্ক হয়ে আছে।


বিশ্বকাপ ২০১৫, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড
বাংলাদেশের সেরা বিশ্বকাপ। ইংল্যান্ডকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো। মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বে এ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জার্সিতে ছিল লাল-সবুজের মিশ্রণ। জার্সির নিচের দিকে বাঘের মুখের জলছাপ জার্সি টিকে দারুণ আকর্ষণীয় করেছিল। পুরো জার্সি টিতেই ছিল বাঘের ডোরাকাটার আদল। হাতা ছিল লাল রঙের। কোয়ার্টার ফাইনালের ভারতের বিপক্ষে হেরে বিদায় নিলেও এ বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স ছিল ভবিষ্যতের পাথেয়।




 বিশ্বকাপ ২০১৯, ইংল্যান্ড



বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশ দলের জার্সির রং করা হয় সবুজ। খেলার সব সরঞ্জামে সবুজের ছোঁয়া। জার্সির কোথাও এতটুকু কেন লাল নেই, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন দেশের ক্রিকেট অনুরাগীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় মাশরাফি বিন মোর্তাজাদের জার্সি নিয়ে ক্ষোভ দানা বাঁধে।

ক্রিকেট অনুরাগীদের প্রবল আপত্তিতে শেষ মুহূর্তে আইসিসি বিশ্বকাপ শুরুর আগে জাতীয় দলের জার্সি পালটাল বাংলাদেশ।

বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশ দলের জার্সির রং করা হয় সবুজ। খেলার সব সরঞ্জামে সবুজের ছোঁয়া। জার্সির কোথাও এতটুকু কেন লাল নেই, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন দেশের ক্রিকেট অনুরাগীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় মাশরাফি বিন মোর্তাজাদের জার্সি নিয়ে ক্ষোভ দানা বাঁধে। তার পরেই সিদ্ধান্ত বদলায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।

Share To:

Naim Khan

Post A Comment:

0 comments so far,add yours