স্পেশাল ফোর্স। কথাটা নিউজ মিডিয়া যতটা না পরিচয় করিয়েছে, তার চেয়ে মানুষকে বেশি পরিচয় করিয়েছে হলিউডের সিনেমাগুলি। ধুন্ধুমার গুলির লড়াই আর বুদ্ধির খেলায় ভরপুর অ্যাকশন থ্রিলার মুভিগুলি দেখতে বেশ ভালোলাগে আমাদের অনেকেরই। কানের কাছে অনেকে যখন বলে ওঠেন, 'ধুর এসব সত্যি হয় নাকি, সব গাঁজাখুরি গল্প', তখন তাদেরকে আমরা পাত্তা না দেওয়ার চেষ্টা করি। কারণ, হাতের কাছে বলার মতো কোনও তথ্য থাকে না চটজলদি।
আসলে স্পেশাল ফোর্স মানেই ব্যাপারটা গোপনীয়তার সঙ্গে জড়িত। মার্কিন মুলুকে স্পেশাল ফোর্স যে আছে, আমাদের প্রজন্মে তা জেনেছে আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদী নির্মূল করার আভিযানে মধ্য দিয়ে। পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে আল-কায়দার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেনকে তার ডেরায় ঢুকে হত্যার খবর খবরের শিরোনামে আসায়।








মার্কিন মুলুকের মতো বিশ্বের সব দেশেই স্পেশাল ফোর্স আছে। আর তা গোয়েন্দাগিরি এবং গোপন অভিযানের উদ্দেশ্যে তৈরি। এই স্পেশাল ফোর্সের উত্‍পত্তি জার্মানদের হাত ধরে। বিংশ শতাব্দীতে যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়েছিল, সেই সময়কার কথা। জার্মানি গোপনে লড়াই চালানো এবং অন্যান্য দেশের সামরিক খবর অনুসন্ধানের উদ্দেশ্যে ব্র্যান্ডেরবুর্গ নামে একটি ফোর্স গঠন করে। ওখান থেকেই স্পেশাল ফোর্সের উত্‍পত্তি। আগেই বলেছি, বিশ্বের অন্যান্য দেশেও স্পেশাল ফোর্স আছে, আর তা নিরাপত্তার ক্ষেত্রের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাদের মধ্যে সেরা স্পেশাল ফোর্স কোনটি বেছে নেওয়া খুব মুশকিল হলেও, বিভিন্ন দেশের স্পেশাল ফোর্সদের নিয়ে সেরা পনেরোর একটি তালিকা তৈরির চেষ্টা করা হলো।


১. ইউনাইটেড স্টেটস নেভি সিলস
সিলস বিশ্বের সেরা স্পেশাল ফোর্স। ১৯৬২ সালে গঠিত এই স্পেশাল ফোর্স নৌসেনার অন্তর্গত হলেও, এর সেনাদের স্থল, বায়ু এবং জলে সামরিক লড়াইয়ের জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। টোয়াইন টাওয়ারে ৯/১১'র হামলার পর থেকে সিলস আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে চলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসদমন কর্মযজ্ঞে। সিআইএ'র দুই শাখা স্পেশাল অ্যাকটিভিটিস ডিভিশন এবং স্পেশাল অপারেশনস গ্রুপে এই সিল থেকেই অফিসার নিয়োগ করা হয়। সিলস এবং সিআইএ একসঙ্গে কাজ করছে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় থেকে। পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে গোপন ডেরায় ঢুকে লাদেনকে হত্যার কাজও সিলস এবং সিআইএ একসঙ্গে করেছিল।

২. এসবিএস - ব্রিটিশ যুক্তরাষ্ট্র
স্পেশাল বোট সার্ভিসেস। ব্রিটিশ যুক্তরাষ্ট্রের আরও একটি প্রখ্যাত স্পেশাল ফোর্স। এর উত্‍পত্তিও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে। মূলত নৌযুদ্ধেই একে কাজে লাগানোর জন্য তৈরি। তবে, সামুদ্রিক পথে গিয়ে স্থলে নেমেও যুদ্ধ করতে বিশেষ প্রশিক্ষনরত সেনারা। এসবিএস যোগ দেওয়ার আগে অত্যন্ত কঠোর প্রশিক্ষণ পাশ করতে হয়। পাহাড়ি এলাকা এবং জঙ্গলের মধ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, কিভাবে বেঁচে থেকে লড়াই করতে হয়। এসবিএসে যোগ দেওয়ার জন্য কোনও প্রার্থীকে পাশ করার জন্য দু'বারের বেশি সুযোগ দেওয়া হয় না।


৩. এসএএস - ব্রিটেন
ব্রিটিশ স্পেশাল এয়ার সার্ভিসেস, সংক্ষেপে এসএএস। এসবিএস ও এসএএস বিশ্বের অন্যতম বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শাখা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪১ সালে এই শাখা গঠন করেছিল ব্রিটিশ সেনা। বিশ্বের অন্যতম পুরনো স্পেশাল ফোর্সের মধ্যে অন্যতম এই শাখা বিশ্বের অন্যান্য দেশকে উদ্বুদ্ধ করেছে স্পেশাল ফোর্স গঠনে। ১৯৪৭ সালে এসএএসকে পুনর্গঠিত করা হয়েছিল স্থলসেনার জন্য। ১৯৮০ সালে লন্ডনে ইরানের দূতাবাস সন্ত্রাসবাদীদের হাত থেকে মুক্ত করার কাজ এসএএস'ই করেছিল। তারপর থেকে দুনিয়াজুড়ে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। আর এরপর থেকেই তিন ধরনের সেনার সঙ্গেই কাজ করার শুরু করে এসএএস। সন্ত্রাসবাদ দমন করে শান্তি প্রতিষ্ঠিত করতে গোপনে কাজ করে যাওয়াই এই স্পেশাল ফোর্সের কাজ।



৪. সায়েরেত মতকল - ইজরায়েল


ইজারেয়িলে সেনার এই স্পেশাল ফোর্সের অন্যতম কাজ হল গোয়েন্দাগিরি চালানো এবং গোপন খবর সংগ্রহ করা। শত্রুদেশের সীমা পার করে খবর আনতেও বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত। ব্রিটিশ যুক্তরাষ্ট্র এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদলেই গঠিত এই স্পেশাল ফোর্স।



৫. জিআইজিএন - ফ্রান্স
ফ্রান্সের ন্যাশনাল গেন্ডারমেরি ইন্টারভেনশন গ্রুপের সঙ্গে পেরে ওঠার মতো খুব কম এলিট ফোর্স রয়েছে। অত্যন্ত সুক্ষভাবে কাজকর্ম চালায় জিআইজিএন। ২০০জন বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অফিসারের এই ফোর্স যে কোনও পরিস্থিতিতে বন্দি উদ্ধারে সিদ্ধহস্ত। মিউনিখ অলিম্পিক গেমসের সময় ইজরায়েলী অ্যাথলিটদের অপহরনের ঘটনার পরই এই স্পেশাল ফোর্স গঠন করে ফ্রান্সের সেনাবাহিনী। ১৯৭৩ সাল থেকে জিআইজিএন কাজ করে আসছে। যে কোনও ধরনের বড় হামলাও রুখতে সক্ষম এই শাখা।


৬. আলফা গ্রুপ - রাশিয়া


গোপন সামরিক অভিযানে বিশ্বের অন্যতম সেরা স্পেশাল ফোর্স হিসেবে স্বীকৃত রাশিয়ার এই বিশেষ বাহিনী। ১৯৭৪ সালে কেজিবি সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় এই স্পেশাল ফোর্স গঠন করেছিল। আলফা গ্রুপের কাজকর্ম গোপনেই রাখে রাশিয়া। বর্তমানে তার সঙ্গে এফএসবি নামে আরও একটি শাখাকে অন্তর্ভুক্ত করেছে কেজিবি। আলফা গ্রুপ দেশের ভেতর এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পুলিশের কাজ, প্যারামিলিটারি অপারেশন, গোপন লড়াইয়ের কাজ করে।



৭. ইউনিদাদ দে অপারেসিওনেস এসস্পেশিয়ানেস - স্পেন


স্পেনের স্পেশাল ফোর্স বিশ্বের অন্যতম সেরা। ২০০৯ থেকেই মূলত এর সঙ্গে পরিচয় হয় গোটা বিশ্বের। তার আগে গোপনই ছিল নাম। স্পেনীয় নৌসেনার বিশেষ এই শাখা ইউরোপেরও অন্যতম সেরা। সামুদ্রিক লড়াই ও উপকূলীয় অঞ্চলে লড়াই, দেশের অভ্যন্তরে যে কোনও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের মোকাবিলায় পটু এই শাখা ১৯৫২ সাল থেকে কাজ করে আসছে।




৮. মার্কোস - ভারত


মেরিন কমান্ডো ফোর্স ভারতীয় নৌসেনার একটি বিশেষ শাখা। জল ও স্থলে শত্রুপক্ষের মোকাবিলা করা, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা, সম্মুখসমর, বিশেষ ধরনের হামলা চালানো, যুদ্ধের মতো পরিস্থিতির মোকাবিলা, বন্দি উদ্ধার, অস্থাবর যুদ্ধ এবং যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি আটকানোর মতো বিভিন্ন কাজে দক্ষ ভারতীয় নৌসেনার এই স্পেশাল ফোর্স। মার্কোসের প্রতিটি সদস্য জলযুদ্ধের সময় যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় সক্ষম। সেইভাবেই তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।


৯. ডেল্টা ফোর্স - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

ফাস্ট স্পেশাল ফোর্সেস অপারেশনাল ডিটাচমেন্ট-ডেল্টা (ফাস্ট এসএফওডিডি), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই স্পেশাল ফোর্স বিশ্বখ্যাত। ডেল্টা ফোর্স নামেই সবাই চেনে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসবাদের মুখে বারবার পড়ায়, ১৯৯৭ সালে ডেল্টা ফোর্স গঠন করে, তার মোকাবিলার জন্য। ব্রিটিশ যুক্তরাষ্ট্রের এসএএসের আদলে তৈরি এই স্পেশাল ফোর্স যাঁর হাত দিয়ে তৈরি, তিনি এসএএসের প্রাক্তন কর্মী ছিলেন। সন্ত্রাসদমন, গোপনে আক্রমণ চালানো, বন্দি উদ্ধারের মতো নানান গোপন মিশনে ডেল্টা ফোর্সকে ব্যবহার করা হয়।


১০. জিএসজি ৯ - জার্মানি

জার্মান ফেডারেল পুলিশের সন্ত্রাস দমন এবং বিশেষ কার্যসম্পাদন শাখা। মিউনিখে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক চলার সময় ১১ জন ইজরায়েলী অ্যাথলিটকে বন্দি করে সন্ত্রাসবাদীরা। জার্মান পুলিশ প্রথম দফায় সফল না হলেও, পরে সবাইকে উদ্ধার করে। এরপর এইধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য জার্মান পুলিশ ১৯৭৩ সালে এই স্পেশাল ফোর্স গঠন করে। বন্দি উদ্ধার, অপহরণের ঘটনা, সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা এবং উত্‍পীড়নের মতো পরিস্থিততে মোকাবিলায় জিএসজি ৯'কে ব্যবহার করে জার্মান পুলিশ। তাদের সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী ১৯৭২ সাল থেকে ২০০৩ পর্যন্ত, দেড় হাজারেরও বেশি স্পেশাল অপারেশন সামলেছে এই স্পেশাল ফোর্স। আর তার মধ্যে মাত্র পাঁচবার বন্দুকের ভারি লড়াইয়ের মুখে পড়তে হয়েছে।



১১. এসএসজি - পাকিস্তান

স্পেশাল সার্ভিসেস গ্রুপ। পাকিস্তানের আই স্পেশাল ফোর্স'কে ব্ল্যাক স্টর্কস বলা হয়। মাথায় বিশেষ ধরনের হেডগিয়ার পরেন এসএসজি কমান্ডোরা। মার্কিন আর্মি এবং ব্রিটিশ আর্মির বিশেষ শাখার আদলে পাকিস্তান আর্মি ১৯৫৬ সালে এই এসএসজি গঠন করে। অত্যন্ত কঠোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এসএসডি কমান্ডোদের। সবধরের যন্ত্র, অস্ত্র নিয়ে বারো ঘণ্টায় ৩৬ মাইল এবং পঞ্চাশ মিনিটে ৫ মাইল দূরত্ব অতিক্রম করতে পারলে, তবেই এই বাহিনীতে যোগ দিতে পারেন পাকিস্তানের কোনও সেনা অফিসার। অসীম সাহস এবং সাহসিকতার জন্য এসএসজি সারা বিশ্বে বিখ্যাত। নানা রকমের গোপন সামরিক অভিযান সহ সীমান্ত এলাকায় সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় পাক সেনা এসএসজি'কে ব্যবহার করে।


১২. জে ডব্লু গ্রম - পোল্যান্ড
জেদনসত্‍কা ওজকোয়া গ্রম নামের এই স্পেশাল ফোর্স পোল্যান্ডের সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা শাখা। সারা বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদ ক্রমাগত বেড়ে চলায় ১৯৯০ সালের ১৩ জুলাই পোল্যান্ড সরকারিভাবে এই শাখাকে গোয়েন্দা বিভাগে কার্যকর করে। গ্রম শব্দের অর্থ হল থান্ডার। পোলিশ সেনাবাহিনীতে পাঁচটি স্পেশাল ফোর্সের শাখা রয়েছে। তার মধ্যে জে ডব্লু গ্রম সেরা। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার পাশাপাশি শত্রুদেশের সীমারেখা পার করে তাদের ডেরায় আক্রমণ হানতেও সিদ্ধহস্ত পোলিশ আর্মির এই বিশেষ শাখা।


১৩. একো কোবরা - অস্ট্রিয়া
১৯৭২ সালে মিউনিখ অলিম্পিকের সময় ইজরায়েলী অ্যাথলিটদের ওপর হামলা হয়। ওই ঘটনার কথা মাথায় রেখে ১৯৭৮ সালে অস্ট্রিয়া একো কোবরার গঠন করে। পুরো নাম হলো - আইনস্যাত্‍জকমান্ডো কোবরা। অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে কাজ করা এই স্পেশাল ফোর্সের দায়িত্ব হলো সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা এবং যুদ্ধকালীন কোনও পরিস্থিতিতে গোপন খবর সংগ্রহ করার পাশাপাশি তা প্রতিহত করা। ১৯৯৬ সালে গ্রাজ-কার্লৌ জেল থেকে আটকদের মুক্তি করার মতো এরকম আর অনেক গোপন অপারেশন চালিয়ে সফালতা পেয়েছে একো কোবরা। প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিশ্বের অন্যতম সেরা অস্ট্রিয়ার এই স্পেশাল ফোর্স।


১৪. জিআইএস - ইতালি
ইতালীয় ভাষায় পুরো নাম - গ্রুপো দি ইন্তারভেন্তো স্পেশিয়ালে। ইতালিয়ান কার্বিনিয়েরি মিলিটারি পোলিস-এর সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা শাখা জিআইএস। দুনিয়া জুড়ে সন্ত্রাসবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে থাকায় দেশের নিরাপত্তার জন্য ১৯৭৮ সালে ইতালিয়ান স্টেট পোলিস এই স্পেশাল ফোর্স গঠন করে। বর্তমানে জিআইএসে খ্যাতি সারা বিশ্বজুড়ে। একশো জনের বেশি বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত অফিসারদের এই গ্রুপ সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার পাশাপাশি অন্যান্য দেশের স্পেশাল ফোর্সকেও নিরাপত্তা জনিত এবং বিশেষ সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়।


১৫. মারুন বেরেটস - তুর্কি


তুর্কি সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ শাখা। বিশেষ বিশেষ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ অভিযান চালানোর জন্য মারুন বেরেটস'কে ব্যবহার করে তুর্কি সেনা। বিশ্বের অন্যতম সেরা স্পেসাল ফোর্সের মধ্যে অন্যতম মারুন বেরেটস টানা চারবার ন্যাটোর স্পেশাল ফোর্স প্রতিযোগিতা জিতেছে। টার্কিশ আর্মিতে চার বছর ধরে কঠোর অনুশীলন নেওয়ার পর যে কেউ স্বেচ্ছায় এই স্পেশাল ফোর্সে যোগ দিতে পারেন।

Share To:

Naim Khan

Post A Comment:

0 comments so far,add yours