জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রকৃত মানবীয় গুণাবলির সঠিক বিকাশ ও উৎকর্ষতা সাধনই নৈতিকতা। এ নৈতিকতাই সামাজিক শান্তি ও নিরাপত্তার রক্ষাকবচ। যে সমাজের মানুষের মধ্যে নৈতিকতাবোধ যতটা বেশি থাকবে সে সমাজের মানুষ ততটাই শান্তি ও নিরাপত্তা ভোগ করবে। আর নৈতিকতা বিবর্জিত সমাজে দেখা দেয় হিংসা, বিদ্বেষ, মারামারি ও হানাহানি। প্রাক ইসলামী যুগেও আরবে সামাজিক অবস্থা ছিল খুব নাজুক। মানবতা ধুঁকে ধুঁকে কাঁদছিল। নৈতিক মূল্যবোধের ছিটেফোঁটাও ছিল না। নৈতিক অবক্ষয়ের পর্যুদস্ত সমাজে নৈতিকতার আলোকবর্তিকা নিয়ে এসেছিলেন হজরত মুহাম্মদ (সা.)। মানবতার নবী শোষিত বঞ্চিত নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষকে মুক্তি ও কল্যাণের পথ দেখান। তার দীর্ঘ ২৩ বছরের ক্লান্তিহীন পরিশ্রম ও অবর্ণনীয় ত্যাগের বিনিময়ে সেকালের আরবে প্রতিষ্ঠিত হয় অনাবিল শান্তিশৃঙ্খলা। মানুষের মাঝে সততা, ন্যায়পরায়ণতা, সত্যনিষ্ঠা, সহমর্মিতা, ধৈর্যশীলতা ও মহানুভবতার মতো মহৎ গুণাবলি ও নৈতিকতার বিকাশ ঘটে। আজকের পৃথিবীও একটুখানি শান্তির আশায় উন্মুখ হয়ে আছে। আজকের সমাজেও নৈতিকতা মূল্যবোধের মারাত্মক ধস নেমেছে। অনৈতিকতার স্রোতে মানুষ নিজ জাতিসত্তা ও ধর্মীয় অনুভূতি খুইয়ে বসেছে। অন্যায়-অবিচার, অপরাধ, দুর্নীতি, সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড সমাজকে কলুষিত করে ফেলেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হচ্ছে হজরত মুহাম্মদ (সা.) প্রদর্শিত দীন ইসলামের সঠিক বাস্তবায়ন ও অনুসরণ। আজকের সমাজও যদি ইসলামের সর্বজনীনতাকে উপলব্ধি করে তবেই সমাজ থেকে অনৈতিকতা দূর হবে। সততা, ন্যায়পরায়ণতা, শৃঙ্খলা, দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধসহ যাবতীয় মানবীয় গুণাবলির উন্মেষ ও বিকাশ ঘটবে। সমাজ থেকে দূর হবে অনৈতিকতার কালো মেঘ। কারণ, যুগে যুগে বারবার প্রমাণিত হয়েছে, নৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো পথই নেই। সুতরাং আমাদের সে পথেই এগোতে হবে।  আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামের নৈতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার তওফিক দান করুন।
লেখক : খতিব, মুহাম্মাদিয়া দারুল উলুম জামে মসজিদ, ঢাকা।
উৎস: বাংলাদেশ প্রতিদিন
Share To:

Naim Khan

Post A Comment:

0 comments so far,add yours